ছুটির পর স্কুলের টয়লেটে আটকা ছিল শিশু, ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার

মাদারীপুর প্রতিনিধি
১৮ মে ২০২৪, ২১:৪৩
শেয়ার :
ছুটির পর স্কুলের টয়লেটে আটকা ছিল শিশু, ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার

মাদারীপুরে স্কুলের টয়লেটে আটকা পড়ার ৬ ঘণ্টা পর প্রথম শ্রেণির এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার ঘটনাটি জানাজনি হলেও গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া ছাত্রের নাম রাফিন।

এলাকাবাসী ও ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচখোলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে রাফিন। সে ৯ নং পাঁচখোলা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও স্কুলে গিয়েছিল রাফিন। তখন তাদের পরীক্ষা চলতেছিল। পরীক্ষা শেষে বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর রাফিন টয়লেটে যায়। এদিকে স্কুলের দপ্তরি খোকন খান টয়লেট চেক না করেই বাহির থেকে রঁশি দিয়ে আটকিয়ে দেন। পরে শিশুটি দরজা খোলার জন্য ডাক চিৎকার করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এ সময় বারবার দরজা খোলার চিৎকার করায় শিশুটির মুখ দিয়ে রক্ত এসে যায়। ৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর শিশুটি একপর্যায়ে টয়লেটের দরজাটি খুলতে সক্ষম হয়।

 এদিকে ছুটির পর শিশুটি বাড়িতে না ফেরায় তার বাড়ির লোকজন বিভিন্ন ছাত্র ও আত্মীয়ের বাড়িতে খুঁজতে থাকেন। এদিকে সন্ধ্যা ৬টার পর বিদ্যালয়ের ৩ তলা থেকে এক মুদি দোকানদারকে বিদ্যালয়ের কেচি গেট খোলার জন্য ওই শিশু ডাকাডাকি করে। একপর্যায়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে, বিষয়টি খেয়াল করে কয়েকজন মিলে শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।

এলাকাবাসী এ ঘটনাকে ১৯৮০ সালের শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘ছুটির ঘণ্টা’র সঙ্গে তুলনা করছেন। তারা বলেন, ৬ ঘণ্টা পর শিশুটি স্কুলের টয়লেট থেকে জীবিত ফিরে এলেও আর কিছু সময় হলেই ছুটির ঘণ্টা বেজে যেত শিশুটির।

সরেজমিনে ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে ওই শিশুটির সঙ্গে দেখা করলেও তার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

স্কুল সংলগ্ন দোকানদার বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্কুলের টয়লেটে আটকা থাকার পর সে একাই দরজা খুলকে সামর্থ হয়। পরে তিন তালার বেলকনি থেকে আমাদের ডাক দেয়। আমরা তাকে গিয়ে উদ্ধার করি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, ‘সেদিন আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। বের হবার আগ পর্যন্ত এমন কিছু আমার নজরে পড়েনি। আমি পরে জানতে পেরেছি। বিষয়টির সঙ্গে কে জড়িত রয়েছে, তা তদন্ত করা হবে।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মামুন বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনহত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’