বন্ধ রেস্তোরাঁ খোলার পথ খুঁজছে সরকার

অগ্নিনিরোধক দরজা স্থাপনের পরামর্শ দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি মালিক সমিতির তৈরি হচ্ছে গাইডলাইন

শাহজাহান মোল্লা
০৮ মে ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
বন্ধ রেস্তোরাঁ খোলার পথ খুঁজছে সরকার

রাজধানীর নিউ বেইলি রোডের গ্রিন ক্রোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সেবা সংস্থাগুলো। ভবনটিতে আবাসিক-কাম-অফিসের অনুমোদন থাকলেও ছিল না রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমোদন। এরপর রমজান মাসেই হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান চালায় রাজউক, দুই সিটি করপোরেশনসহ পুলিশ ও র‍্যাব। অভিযানে অকুপেন্সি সনদ না থাকায় ১৯টি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেয় রাজউক। এ ছাড়া ডিএসসিসি তিনটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করলেও পরবর্তী সময় মুচলেকা নিয়ে খুলে দেয়।

তবে রাজউকের সিলগালা করা রেস্তোরাঁগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে। এগুলো খুলে দেওয়ার জন্য রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সংস্থাগুলোর দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও এখনো সমাধান মেলেনি। তাই সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটির কাজ হোটেল ও রেস্তোরাঁসমূহের অবকাঠামোগত অগ্নিনিরাপত্তা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তাসহ সব প্রকার ত্রুটি চিহ্নিতকরণ ও সংশোধন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা প্রণয়ন, করণীয় নির্ধারণ এবং গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সব পক্ষের আলোচনায় গুরুত্ব পায়, কীভাবে সেবা সহজীকরণ যায় এবং অগ্নিনিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যমান রেস্তোরাঁগুলোকে কীভাবে খোলা যায় তার জন্য একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করা।

গতকালকের সভায় ছিলেন রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) মেজর ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব)। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, সভায় ঘুরেফিরে একটা বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে- অগ্নিঝুঁকি হ্রাস করা। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটা গাইডলাইন বের হবে। সেখানে কোন সংস্থার কী কাজ তা থাকবে।

কমিটির আরেক সদস্য বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্বল্পমেয়াদি কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন অগ্নিনিরোধক দরজা স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় ফায়ার স্প্রিংক্লার ব্যবস্থা স্থাপন, যা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য।

রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান আমাদের সময়কে বলেন, বন্ধ রেস্তোরাঁ দ্রুত খুলে দিতে বলেছি। ব্যবসায়ীরা অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করেই ব্যবসা করবে। তিনি বলেন, ঢাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৭ হাজারের মতো রেস্তোরাঁ রয়েছে। এসব রেস্তোরাঁ মালিকদের অনেক সংস্থা থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। তাই একটি সংস্থার মাধ্যমে সব সনদ পাওয়ার দাবি জানান তিনি।

এদিকে গ্রিন কোজি ক্রোটেজে অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকার দুই হাজার ৩০০ ভবন মালিককে চিঠি দেয় রাজউক। এসব ভবন মালিক অকুপেন্সি সনদের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবনের ব্যবহার করছে। চিঠিতে আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বা হোটেল-রেস্তোরাঁ চালানোর জবাব চেয়েছে রাজউক। তবে কোনো ভবন মালিককে শাস্তি দেওয়া হয়নি।