মর্টারশেলের বিকট বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভা সীমান্তের নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। ইতোমধ্যে অনেক ক্যাম্প দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
গত দুই দিনে প্রাণের ভয়ে অস্ত্র গোলাবারুদসহ মিয়ানমারের থেকে পালিয়ে দেশটির ১২৮ সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা সবাই বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিকট শব্দে টেকনাফ পৌরসভা বাড়িঘর পর্যন্ত কাঁপছে। এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পৌরসভার জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আলম বলেন, ‘মনে হচ্ছে মিয়ানমারে মর্টারশেল যেন ঘরের সামনে পড়ছে! সকালে থেকে গোলাগুলির বিকট শব্দে কাঁপছে টেকনাফ পৌর শহর। আমরা খুবই আতঙ্কে রয়েছি। জন্মের পর থেকে এরকম গোলাগুলি কখনো শুনিনি।’
টেকনাফ পৌরসভার খাংকার পাড়া বাসিন্দা মো. আনুয়ার বলেন, ‘সকাল থেকে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিস্ফোরণ অনেক ভয়ানকভাবে হচ্ছে। আমরা যারা সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাস করছি, তারা খুবই আতঙ্কে রয়েছি।’
টেকনাফ পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর আরাফা বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে মর্টারশেলের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মধ্যম জালিয়া পাড়া কুলালপাড়া, ডেইলপাড়া, খাংকার পাড়াসহ অন্তত ৮টি গ্রাম। এতে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ‘নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের ভেতর থেকে গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পেয়েছি। সকাল থেকে ভারী মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া এখনো মাঝে মাঝে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে নাফ নদে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা আতঙ্কে রয়েছেন।’
বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গোলাগুলি চলছে। তবে নাফ নদের বাংলাদেশ সীমান্তের এপারে মাদক ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বিজিবির টহল কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি টেকনাফ সীমান্তে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার বিষয়টি অবহিত করেছেন। মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।