উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৪ শতাংশ মানুষের ভালো ঘুম হয় না
পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৪ শতাংশ মানুষের ভালো ঘুম হয় না বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, এসব অঞ্চলে উদ্বেগজনিত সমস্যায় ভুগছেন ২৫ শতাংশ ও বিষণ্ণতায় ভুগছেন ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৯ শতাংশ মানুষ মানসিক চাপে আছেন ও দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য দেখা দিয়েছে ২০ শতাংশ মানুষের।
দেশের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ যৌথভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের ওপর এই জরিপ করে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন এ এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের আরও প্রভাব জানতে এখন আমাদের পরিবারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের একটি সমন্বয়মূলক প্রভাব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মানুষের ব্যক্তিত্বের নানা সমস্যা দেখা যায়।’
বেলজিয়ামের দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ডা. ড্যানিয়েল নোভাক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বিপজ্জনক। সুইডেনে মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ প্রভাব জেনে তাদের বাচ্চাদের হত্যা করেছে। এমন উদাহারণ আছে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
গবেষণায় বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অপ্রতুলতা, সেবাদানকারীদের পেশাদারিত্বের ঘাটতি, সীমিত আর্থ সামাজিক সহায়তা, ওষুধের ঘাটতি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপ্রতুলতা রয়েছে। এমনকি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা নাগালের বাইরে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ জন জীবনযাত্রায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, যেমন- জীবিকার সীমাবদ্ধতা, উচ্চ অভিবাসনের হার এবং সামাজিক দ্বন্দ্বের ইত্যাদি।
গবেষণায় এসব ঝুঁকি মোকাবেলায় বেশি কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবার বিধান বাড়ানো, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করা, কাউন্সেলিং ইউনিট স্থাপন করা, দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া, নীতি এবং আইনি কাঠামোর পরিবর্তন এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা এবং বিধানগুলি উন্নত করা।