মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে হামলায় ৪ পুলিশ আহত

রাজশাহী ব্যুরো
২৭ এপ্রিল ২০২৪, ২০:০৭
শেয়ার :
মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে হামলায় ৪ পুলিশ আহত

মাদক উদ্ধার অভিযানে গিয়ে দুই দফা হামলার শিকার হয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযানে ১৯ বোতল ফেনসিডিল জব্দ ও ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পদ্মার ওপারে সীমান্তবর্তী গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর গ্রামে মাদক উদ্ধারে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঘটনায় মাহবুব নামের এক কনস্টেবলকে গুরুতর আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথা ফেটে যাওয়ায় ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে। কনস্টেবল মাহবুবের একটি হাত ভেঙে গেছে। আহত অপর তিন পুলিশ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেলে পদ্মার ওপারে বারীনগর গ্রামে মাদক উদ্ধারে গেলে সংঘবদ্ধ মাদককারবারী দলের নেতা তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী চার পুলিশ সদস্যকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে বেধড়ক মারধর করে।

পুলিশ আরও জানায়, ওইদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পদ্মার চরাঞ্চলের বারীনগরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ১৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুই নারীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, মাদক উদ্ধারের নামে পুলিশের চার সদস্যের দলটি সাদা পোশাকে বারীনগর গ্রামের রফিকের বাড়িতে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রফিক পালিয়ে যান। তবে মাদক না পেলেও পুলিশ রফিকের ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

তারা আরও জানান, পুলিশ যে রফিককে গ্রেপ্তার করতে যায় তিনি নিজেও পুলিশের সোর্স। রফিকের ভাইকে আটকের সময় তার ৮ বছর বয়সী শিশু বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় এক পুলিশ ওই শিশুটিকে লাথি মারে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের দলটিকে ঘেরাও করেন। তারা পুলিশের কাছে জানতে চান কেন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রামবাসী পুলিশকে ঘেরাও করে তাদের কাছে জানতে চাইছিলেন মাদক না পাওয়া গেলে কেন তারা একজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তোজাম্মেল মেম্বারের নেতৃত্বে গ্রামবাসী পুলিশের দলটিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এসআই আতিকসহ তিন পুলিশ সদস্য তোপের মুখে কনস্টেবল মাহবুবকে ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসী কনস্টেবল মাহবুবকে বেধড়ক পেটায়। এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং একটি হাত ভেঙে যায়। 

রাজশাহী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল আলম বলেন, এ ঘটনায় গোদাগাড়ী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে। একটি মাদকের মামলা ও অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। মাদকের মামলায় দুজন ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৬ জনকে আজ শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।