বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আবারও জেব্রার ঘরে নতুন অতিথি
আবারও জেব্রার ঘরে নতুন অতিথি এসেছে কক্সবাজারস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। নতুন অতিথিকে ঘিরে পার্কের কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাস দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে জেব্রার পালে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত। এর মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি মাদি এবং তিনটি বাচ্চা।
গত মঙ্গলবারে জেব্রার বাচ্চা জন্ম নিলেও নানা কারণে তাকে নিরাপদে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেব্রার বেষ্টনিতে অন্যান্য জেব্রাদের পিছন পিছন হাঁটছে সদ্য জন্ম নেওয়া জেব্রার শাবক। তবে মাকে ছাড়া চলছে না শাবকটির। একটু পর পর মার থেকে দুধ খেতে ছুটে যাচ্ছে শাবকটি। মাও তার আদরের শাবককে দুধ খাওয়াচ্ছে। দুধ খাওয়া শেষ হলেই দৌঁড়াদৌঁড়ি শুরু করে দিচ্ছে। আবার ফিরে আসছে মায়ের কাছে।
চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘জেব্রার শাবকটি চারদিন আগে জন্ম হওয়ায় বাচ্চাটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। মা জেব্রা ও শাবকটি সুস্থ রয়েছে। শাবকটি জন্মের পর থেকে মায়ের সঙ্গে ঘোরাফেরা করছে। এখনো জেব্রাশাবকটির নামকরণ করা হয়নি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক সূত্র জানায়, এই সাফারি পার্কে চতুর্থবারের মতো বাচ্চা দিল জেব্রা। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জেব্রার জন্ম হয়। এরপর ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালের ১১ মার্চ জেব্রা পার্কের আবদ্ধ পরিবেশে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। গত ২০ এপ্রিল জন্ম নেওয়া সদ্যোজাত শাবকসহ সাতটি জেব্রা রয়েছে।
২০১৮ সালের ১৭ মে বেনাপোল সীমান্ত থেকে ছয়টি জেব্রা জব্দ করে পুলিশ। এদের মধ্যে তিনটি পুরুষ এবং তিনটি মাদি জেব্রা ছিল। জেব্রা ছয়টি গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে রাখা হয়। সেখানে এক মাস থাকার পর জেব্রা ছয়টি চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনার পর ছয়টি জেব্রার থেকে ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই এবং একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনটি জেব্রা মারা যায়। এরপর তিনটি জেব্রা অবশিষ্ট থাকে।
সাফারি পার্ক-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশাল এলাকা নিয়ে গহিন জঙ্গলে জেব্রার বেষ্টনী নির্মাণ করা হয়। এ জন্য জেব্রা জঙ্গলের ভেতরে থাকে। খাবার গ্রহণ করতে বেষ্টনীর ভেতরে এক পাশে চলে আসে। তখন দর্শনার্থীরা জেব্রার দলকে দেখার সুযোগ পায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর ও এ বছর টানা দুই বছর বাচ্চা দিয়েছে জেব্রা। এখন পর্যন্ত চারটি বাচ্চা পাওয়া গেছে। জেব্রা মূলত দলগতভাবে বসবাস করে। দল বেঁধে চলাফেরা করে। এদের দিনে দুই বেলা করে ভুট্টা, ভুষি ও গাজর খেতে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নিজেরা বেষ্টনীতে ঘাস খায়।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ‘সাফারি পার্কে জেব্রার বাচ্চা জন্ম দেওয়া খুবই সুখবর। এতে আমরা বেশ খুশি। পার্কে উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় প্রাণীগুলো বাচ্চা দিচ্ছে। জেব্রা সব পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে। এই পার্কে জেব্রার উপযোগী পরিবেশ ও সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে বাচ্চা দেওয়ার হার বেড়েছে।’