ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার আহ্বান ড. কামালের

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৫
শেয়ার :
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার আহ্বান ড. কামালের

দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের ডাক দিতে এবং মাঠে নামার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন।

আজ রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ড. কামাল হোসেনের ৮৭তম জন্মদিন উৎসব উপলক্ষে’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণফোরাম (একাংশ)।

অনুষ্ঠানের উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে যারা কষ্ট করে এসেছেন তাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের আসার কারণে আমি খুবই উৎসাহিত হচ্ছি। কারণ যে কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে দেশ ও জাতি যাচ্ছে, সেখান থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র পথ হলো, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের সবাইকে আজকে আমরা এখানে পাচ্ছি। আমার আন্তরিক আবেদন, আসেন- আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নেই, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাই।’

ড. কামাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস, ইতিহাস থেকে আমরা যে শিক্ষা পাচ্ছি- যখনই আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে চেয়েছি, যতই কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে থাকে সেখানে আমরা অতিক্রম করতে পেরেছি। আসুন আজকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নেই, যারা যারা আজকে এখানে আছি, যারা আজকে আসতে পারেনি এবং আসার ইচ্ছা ছিল, সবাই মিলে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেই এবং মাঠে নামি।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, ‘দেশে যে অন্ধকার, গভীর অন্ধকার। এই অন্ধকার থেকে সূর্যোদয়ের সময় হয়েছে। এ জন্য আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ড. কামাল হোসেনের মতো একজন নেতা দরকার। তিনি একজন রাজনীতিবিদ। কোনো লোক বলতে পারবেন যে, তিনি দুর্নীতিবাজ ও দখলবাজ। কেউ বলতে পারবেন যে, তিনি কারও ক্ষতি করেছেন। তিনি গণমানুষের নেতা ও যোগ্য মানুষ।’

বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষকে ধারণ করতে পারেনি।’

জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্রের বাতিঘর।’

বদিউল আলম মজুমদার জানান, ড. কামাল হোসেন হচ্ছেন সাধারণ মানুষের আইনজীবী। প্রার্থীদের হলফ নামায় তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং সমূদ্র বিজয় সংক্রান্ত মামলায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। 

দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন তার রাজনৈতিক জীবনে কোনো সামরিক সরকারের সঙ্গে হাত মেলাননি। আওয়ামী লীগ নেতারা অনেকেই মুস্তাক, জিয়া ও এরশাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।’  

১৯৩৭ সালে ২০ এপ্রিল বরিশালের শায়েস্তাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ড. কামাল। এ দিন পারিবারিকভাবে তার জন্মদিন পালন করা হয়। আর গতকাল তার রাজনৈতিক দল গণফোরাম কেক কেটে জন্মদিন পালন করে। নানা রঙের বেলুন ও ফুল দিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানস্থল আবদুস সালাম হল সাজানো হয়।

ড. কামাল বিকাল ৪ টা ৫০ মিনিটে যখন ড. কামাল হোসেন অনুষ্ঠানস্থলে আসেন, তখন সবাই দাঁড়িয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর গণফোরামের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এরপর রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুল গীতি পরিবেশনের মাধ্যমে শিল্পীরা ড. কামাল হোসেনকে গানে গানে শ্রদ্ধা জানান। গণফোরামের পক্ষ জন্মদিন উপলক্ষ্যে ড. কামালকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম আলতাফ হোসেন।

এরপর গণফোরাম, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জাসাদ (আম্বিয়া), বাসদ এর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সুশানের জন্য নাগরিক (সুজন) এর বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান।

গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট এস এম আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমানের উপস্থাপনায় আরো বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। এছাড়া অনুষ্ঠানে গণফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।