কুড়িয়ে পাওয়া টাকার ব্যাগের মালিককে পাওয়া গেল যেভাবে

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৩৩
শেয়ার :
কুড়িয়ে পাওয়া টাকার ব্যাগের মালিককে পাওয়া গেল যেভাবে

রেললাইনের পাশ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া টাকাসহ পোশাকভর্তি ব্যাগ ফেরত দিয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার শিরিন-জিয়া দম্পতি। কুড়িয়ে পাওয়া ব্যাগ আজ বুধবার মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ব্যাগটিতে নগদ সাড়ে ৮ হাজার টাকা, নতুন পোশাক ও ব্যবহারসামগ্রী ছিল।

শিরিন-জিয়া দম্পতি বাগাতিপাড়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লার মালঞ্চি রেলগেট এলাকায় রেলের পরিত্যক্ত জমিতে বসবাস করেন। পেশায় জিয়াউর রহমান জিয়া স্থানীয় ঠিকাদারের সহযোগী এবং শিরিন আক্তার আনসার-ভিডিপির পৌর ওয়ার্ড লিডার।

শিরিন জানান, তার স্বামী জিয়া গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাড়ি সংলগ্ন রেললাইনের পাশের লেবু বাগানে একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পান। সেই ব্যাগে নগদ সাড়ে ৮ হাজার টাকা, বেশ কয়েকটি নতুন পোশাকসহ ব্যবহারের বিভিন্ন সামগ্রী ছিল। এসব মালামাল মালিককে ফেরত দেওয়ার চিন্তা থেকে তারা ব্যাগের মালিককে খুঁজতে শুরু করেন। ব্যাগের ভেতরে থাকা নষ্ট মোবাইল ফোনের সিমকার্ডের সূত্রধরে তারা ব্যাগের মালিক মো. শাকিলের সন্ধান পান। শাকিল রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে। আজ সকালে দুই বন্ধুসহ ব্যাগের মালিক শাকিল তাদের বাড়িতে আসেন। ব্যাগের ভেতরের মানিব্যাগে থাকা ছবি দেখে মালিককের পরিচয় নিশ্চিত হন এবং পুলিশের অনুমতিতে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে টাকাসহ মালামাল তুলে দেন।

ব্যাগের মালিক মো. শাকিল জানান, তিনি ঢাকার মতিঝিলে একটি ছাপাখানায় কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ির সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনে গত ৯ এপ্রিল লালমনি একপ্রেস ট্রেনে রংপুরের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে ট্রেনটি বাগাতিপাড়ার ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় হঠাৎ ব্যাগটি নিচে পড়ে যায়। পরে বাগাতিপাড়া এলাকায় এসে খুঁজেও ব্যাপ পাননি। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে শিরিনের ফোন পান। আজ সকালে রংপুর থেকে এসে টাকাসহ ব্যাগের সব মালামাল ফেরত পেয়েছেন। এ জন্যে তিনি শিরিন-জিয়া দম্পতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তাদের হাতে উপহার হিসেবে অর্থ তুলে দিতে চাইলে ওই দম্পতি তা গ্রহণ করেননি।

শাকিলের সঙ্গে আসা বন্ধু সাকিব বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া টাকাসহ পোশাকভর্তি ব্যাগ ফেরত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন শিরিন-জিয়া দম্পতি।

উল্লেখ্য, শিরিন আক্তার দীর্ঘ দিন থেকে হার্ট, কিডনি এবং মেরুদণ্ডের অসুখে ভুগছেন। ভারতে নিয়মিত চিকিৎসা নেন। ব্যক্তিগত জীবনে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। চিকিৎসার জন্য জমানো ১ লাখ টাকা ও নিজেদের বাড়ি নির্মাণের জন্য কেনা ইট বিক্রি করে করোনাকালে কর্মহীন অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে এবং ইফতারসামগ্রী বিতরণ করে আলোচিত হয়েছিলেন এই দম্পতি।