রাজধানীতে বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার, মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩০
শেয়ার :
রাজধানীতে বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার, মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মোল্লাপাড়ায় কলেজপড়ুয়া ঘুমন্ত ছেলেকে হত্যার পর ঋণগ্রস্ত এক প্রকৌশলী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জন্য ‘কেউ দায়ী নয়’ জানিয়ে ঘরেই একটি সুসাইড নোট পাওয়া গেছে।

আজ রবিববার বিকেলে ১৭১ নম্বর পশ্চিম কাফরুল মোল্লাপাড়া এলাকার ভূঁইয়া ভিলার দ্বিতীয় তলার দরজা ভেঙে প্রকৌশলী মশিউর রহমান (৫০) ও তার ছেলে মোদাব্বির হোসেন সাদাবের (১৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমন্ত ছেলেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেন মশিউর। একই সময় তিনি ১৩ বছরের ঘুমন্ত মেয়ে সিনথিয়াকেও গলায় ফাঁস দিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। সিনথিয়া মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ আলী বলেন, মশিউর রহমান একটি ডেভলপার কোম্পানিতে সাব স্টেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করলেও ৩ বছর ধরে বেকার। পরে শেয়ার বাজারে টাকা লগ্নি করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তি চলছিল। ঢাকা উদ্যান কলেজের ছাত্র সাদাব এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সিনথিয়া সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ওসি বলেন, ঘটনার সময় মশিউরের স্ত্রী বাইরে টিউশনিতে ছিলেন। তিনি বাসায় ফিরে এসে দরজা বন্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া না পেয়ে বিষয়টি জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এ জানান তিনি। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা দরজা ভেঙে ওই কিশোরীকে মুমূর্ষু রক্তাক্ত অবস্থায় শ্যামলীর একটি হাসপাতালে পাঠায়।

তিনি বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মশিউর রহমানকে আর ছেলে সাদাতকে বিছানা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বলেন, ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আর্থিক অনটনে ছিলেন মশিউর রহমান। ধারণা করা হচ্ছে, হতাশা থেকে কোনো কিছু দিয়ে ছেলে-মেয়েকে কুপিয়ে ও ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মশিউর রহমান। ছেলে মারা গেলেও মেয়ে গুরুতর আহত হন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ‘কেউ দায়ী নয়’ জানিয়ে নিহতের লেখা সুসাইড নোট জব্দ করা হয়েছে। কী কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য বাবা-ছেলের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।