মিয়ানমারে সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ শহর হারাল সামরিক জান্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৪
শেয়ার :
মিয়ানমারে সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ শহর হারাল সামরিক জান্তা

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের কাছে আরেকটি গুরুত্বর্পূণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাল মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী একটি শহরের দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের তুমুল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তিন বছরের ক্ষমতায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পার করছে তারা। গত অক্টোবরে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সামরিক টহল চৌকি, অস্ত্রাগার ও বেশ কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিদ্রোহীদের হাতে। সবশেষ ঘুমধুম সীমান্তে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে মিয়ানমারের শতাধিক সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।

সম্প্রতি দেশটির পূর্ব সীমান্তের শহর মায়াওয়ারি শহরের কয়েকশো সেনা কারেন বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। থাইল্যান্ডের সাথে মিয়ানমারের যেসব ব্যবসা-বাণিজ্য হয়, তার বেশিরভাগই এই সীমান্ত শহর দিয়ে হয়ে থাকে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অন্য বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সাথে মিলে এই শহরে হামলা চালিয়ে আসছিল কারেন বিদ্রোহীরা। গত শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে, মায়াওয়ারি শহরের ১০ কিলোমিটার দূরে থানগানিয়াং শহরে অবস্থিত ব্যাটেলিয়নের আত্মসমর্পণ গ্রহণ করেছে।

কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, অনেক তরুণ যোদ্ধারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দেখাচ্ছে, যা তারা সৈন্যদের কাছ থেকে জব্দ করেছে।

গত কয়েক মাসে চীন সীমান্ত সংলগ্ন শান রাজ্যের এলাকা এবং বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের বিপুল এলাকা বিদ্রোহীদের কাছে হারিয়েছে সামরিক জান্তা। হাজার হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে কিংবা পালিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে জান্তা সরকার।

মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন স্বশাসনের জন্য যুদ্ধ করে আসছে। তবে নব্বইয়ের দশকে তারা সরকারি বাহিনীর কাছে বেশ কয়েকটি পরাজয়ের মুখোমুখি হয়। এররপর ২০১৫ সাল থেকে সরকারের সাথে তাদের একটি যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর সেই পরিস্থিতি বদলে যায়। কারেন যোদ্ধারা ঘোষণা করে, অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি বাতিল হয়ে গেছে।