গণমাধ্যমের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নিবিড় সম্পর্ক ছিল: মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান
গণমাধ্যমের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিবিড় সম্পর্ক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানবাধিকার বিষয়টি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণমাধ্যমের নিত্যচর্চার বিষয়। এ কারণে গণমাধ্যম ও মানবাধিকারকর্মীদের কাজ সমমুখী। বৈশ্বিক শান্তি, সহাবস্থান , সহযোগিতা ও সর্বাত্মক কল্যাণের জন্যই যথার্থ মানবাধিকার চর্চা প্রয়োজন। মুক্ত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সুরক্ষা একে অপরের পরিপূরক।’
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় কমিশন নিবিড়ভাবে কাজ করে থাকে। এ পর্যন্ত দেশের যে প্রান্তেই সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছে কমিশন সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই ছিলেন গণমাধ্যমবান্ধব এক রাজনৈতিক নেতা। গণমাধ্যমের সঙ্গে তার ছিল এক নিবিড় সম্পর্ক।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা বলেন, '‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে শহীদুল্লাহ কায়সার, শহীদ সাবের, সিরাজুদ্দীন হোসেন, সেলিনা পারভীনসহ অগণিত সাংবাদিক প্রাণ দিয়েছেন। আমরা তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।’
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন ‘পরিপ্রেক্ষিত’-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে জনগণ। যে দেশে জনগণ মানবাধিকারের প্রশ্নে যতটা সচেতন সেই দেশ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় তত এগিয়ে। বিশ্বের সব মহান ও জনপ্রিয় নেতাই ছিলেন মানবাধিকারের পক্ষে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আব্রাহাম লিংকন ও নেলসন ম্যান্ডেলা কিংবা মহাত্মা গান্ধী তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘গণমাধ্যম ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কীভাবে এক হয়ে কাজ করলে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, আমরা পারস্পরিক সম্পর্ক কীভাবে নির্মাণ করতে পারি সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাত্র ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। আবার ৭৫ এর আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনাগুলো ইতিহাসে বর্বরোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত।’
ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক তার বক্তব্যে মানবাধিকারের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ, বৈশ্বিক শান্তি, মানবাধিকার চর্চার গুরুত্ব ও গণমাধ্যমকর্মীদের দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিস্তৃত পরিসরে উল্লেখ করেন। তিনি মানবাধিকার ধারণাটি গভীরতা ও তাৎপর্য গভীরভাবে উপলব্ধি করার আহ্বান জানান।
সভার শুরুতে কমিশনের পরিচিতি তুলে ধরেন কমিশনের পরিচালক কাজী আরফান আশিক। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. তানিয়া হক ও কংজরী চৌধুরী, সচিব সেবাষ্টিন রেমা, পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম।