‘গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘২৫ মার্চ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের চালানো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আমরা দাবি করে যাব। এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’
আজ সোমবার ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘পলিটিক্স অব জেনোসাইড রিমেম্বারেন্স’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইট প্রিভেনশনের মহাপরিচালক ড. এলিসা ভন ফরগে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশের মাটিতে যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়, তা ছিল বিশ শতাব্দীর অন্যতম নৃশংস গণহত্যা। এই গণহত্যার স্বরূপ ছিল ভয়ংকর। পরিকল্পিত পন্থায় বাঙালিকে খুন করা হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে এসব বর্বরতায় সহযোগী ছিল বাঙালি ও অবাঙালি সদস্য সমন্বয়ে গঠিত রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং শান্তি কমিটির সদস্যরা।’
তিনি বলেন, ‘২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু এক রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিল না, এটা ছিল মূলত বিশ্বসভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক, জঘন্যতম গণহত্যার সূচনামাত্র। পরবর্তী ৯ মাসে ৩০ লাখ নিরাপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা সৃষ্টি করেছিল সেই বর্বর ইতিহাস।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংঘটিত গণহত্যার ছিল পৃথিবীর অন্য যেকোনো খানে ঘটা গণহত্যার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। বাংলাদেশের সংঘটিত গণহত্যা ষড়যন্ত্র শুরু হয় ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের পর হতেই। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শুরুতেই আঘাত হানে ভাষার ওপরে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাবি শাসকচক্র যখন রাষ্ট্রের ৫৬% লোকের মায়ের ভাষ্য বাংলা অস্বীকার করে, তখনই দূরদর্শী তরুণ নেতা শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে ইংরেজি শোষক শাসকের পরিবর্তে আমার পাঞ্জাবি শোষক ও শাসক পেয়েছি। প্রকৃতপক্ষে জনগণের মুক্তি পায়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির স্বাধীনতার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী। পাকিস্তান আন্দোলনের তুখোড় তরুণ নেতা শেখ মুজিব বুঝেছিলেন বাঙালিরা ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হলেও নব্য উপনিবেশ হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। তাই তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার জন্য ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নেন, যার চূড়ান্ত রূপ মহান মুক্তিযুদ্ধ।’
আনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা জাকের ও মফিদুল হক।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার