৫ মাস পর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল, বললেন আন্দোলন চলবে
কারাভোগ ও বিদেশে চিকিৎসার কারণে প্রায় ৫ মাস রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রবিবার গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে কূটনৈতিকদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অংশ নেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট পড়েছে। আমরা এখানে এমন এক সময় ইফতার করতে একত্রিত হয়েছি, যখন দেশে একটা ফ্যাসিস্ট রেজিমের শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ববাসী জানে বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি যা ঘটেছিল তা নির্বাচন নয়, বরং জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি অপমান। নির্লজ্জ কারচুপি, অনিয়ম ও শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও দেশব্যাপী ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ডামি নির্বাচন আখ্যা দিয়েছে।’ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা দায়েরের কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এই ফ্যাসিস্ট রেজিম সরকারের পদত্য্যাগ এবং নতুন নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করছে।’ বর্তমান সংকট সমাধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথাও পুনব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে গভীরভাবে মূল্যায়নের কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতা, যা একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে। যতক্ষণ না আমরা তা অর্জন করতে না পারি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস আন্দোলন চলবে।’
ইফতারে অংশ নেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, অস্ট্রিলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন। এ ছাড়া ইফতার অনুষ্ঠানে চীন, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরাও ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ইফতারে কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান মহাসচিব। ইফতারের আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মীর নাসির, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সুজা উদ্দিন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জহির উদ্দিন স্বপন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, শাহ নেসারুল হক, ইশরাক হোসেন, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার।
আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সাবেক ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের বখতিয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার