কেজিতে নয়, পিস হিসেবেই বিক্রি হচ্ছে তরমুজ

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০২৪, ১৩:১৯
শেয়ার :
কেজিতে নয়, পিস হিসেবেই বিক্রি হচ্ছে তরমুজ

ক্ষেত থেকে কৃষকরা তরমুজ বিক্রি করছেন পিস হিসেবে। আর সেই তরমুজ সাধারণ ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে কেজি হিসেবে। অনেক সময় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে তরমুজের দাম। যে তরমুজ ৬ থেকে ৭শ টাকায় কিনে খাচ্ছেন সাধারন ক্রেতারা, সেই তরমুজই পাইকারিরা কৃষকের কাছ থেকে কিনছে মাত্র ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়। দু-তিন হাত ঘুরে বাজার পর্যন্ত আসতে এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরও ৫থেকে সাড়ে ৫শ টাকা।যার খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

পটুয়াখালীর কুয়াকাটার খাজুরা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ রাসেল আকন এবার প্রায় ১৮ একর (১ একর = ১০০ শতক) জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। কৃষক রাসেল আকনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ,১৮ একর জায়গায় তাদের তরমুজ চাষে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখন অবধি প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পেরেছেন তারা।

কেজি হিসেবে নাকি পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করছেন জানতে চাইলে কৃষক রাসেল বলেন,আমরা কেজি হিসেবে তরমুজ বিক্রি করিনা। ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের তরমুজগুলি আমরা প্রতি ১০০ পিস ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি।সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় একদম বড় সাইজের তরমুজগুলি বিক্রি করি আমরা।

সারাদেশে পটুয়াখালীতে উৎপাদিত তরমুজের বেশ সুনাম রয়েছে।এ বছর জেলার কলাপাড়া উপজেলায় মোট ১৩২৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রায় সবগুলি ক্ষেতের তরমুজই পিস হিসেবে অথবা ক্ষেত অনুযায়ী বিক্রি হয়েছে।

কুয়াকাটার আলীপুরের কৃষক মনির হোসেন এ বছর ২৫ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। তিনিও পিস হিসেবে সম্পূর্ণ ক্ষেত বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো খরচ করে সম্পূর্ণ ক্ষেত বিক্রি করেছেন ৩৩ লক্ষ টাকায়।

ক্ষেত থেকে বাজার পর্যন্ত আসতে একটা তরমুজে ৪ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা বা তারও বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। অথচ কৃষকরা রোদে পুড়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করার পরও কাংখিত লাভবান হতে পারছেন না।

তরমুজের পাইকার মো. সজীবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারাও মোকামে নিয়ে পিস হিসেবেই বিক্রি করেন তরমুজ। তবে কি কারণে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করা হয় সে তথ্য জানা নেই তার।

তিনি আরও জানান, মৌসুমের শুরুতে তরমুজের দাম বেশি ছিলো এবং তারা তরমুজ কিনে অল্প কিছু লাভ করতে পেরেছেন।বর্তমানে সারাদেশের তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে যার কারনে তরমুজের দামও একটু কমেছে এবং সামনে আরও দাম কমবে বলে জানান তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপযুক্ত আবহাওয়া ও বালু মিশ্রিত মাটি হওয়ায় উপজেলার লালুয়া,কুয়াকাটা, মিঠাগঞ্জ,বালিয়াতলী,চম্পাপুর, ও নীলগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪২,৪০০ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। 

কেজিতে নাকি পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ক্ষেত থেকে কৃষকরা পিস হিসেবেই তরমুজ বিক্রি করছেন। তবে বাজারে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এখানে আসলে আমাদের কিছু করার নেই, আমাদের কাছে আইনি ক্ষমতা নেই।’