বগি লাইনচ্যুত হয়ে বসতঘরে /
‘সব শেষ, এখন আমরা কোথায় থাকব?’
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে তিনটি বগি রেললাইনের পাশে বসবাসরত চান মিয়া ও মনোয়ারা বেগম দম্পতির মাথা গোঁজার ঠাঁই কেড়ে নিয়েছে। এতে আরও অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।
গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ঢালুয়া ইউপির হাসানপুর রেলস্টেশনের ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে তেজের বাজার সংলগ্ন শিহর নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় ঘর হারানো মনোয়ারা বেগম দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘দুপুরে আমরা স্বামী-স্ত্রী ঘরের মধ্যেই বসে ছিলাম। কখন যে ঝড়ের বেগে এসে ট্রেন ঘরের উপর পড়ল বুঝতে পারিনি। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব।’
চান মিয়া বলেন, ‘কোথাও থাকার জায়গা না পেয়ে রেললাইনের পাশে কোনো রকম থাকতাম। কখন যে ট্রেন এসে পড়ল, কোনো রকম প্রাণে বেঁচে গেলাম। আমরা দুজনেই ব্যথা পেয়েছি। আমাদের সব শেষ। এখন আমাদের কে দেখবে? আমরা কোথায় থাকব?’
প্রসঙ্গত, রবিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে প্রায় ৬শ যাত্রী বহন করে ১৮টি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় বিজয় এক্সপ্রেস। দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর তেজের বাজার আসলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এতে ট্রেনের ৯টি বগি ও প্রায় সাড়ে ৫০০ মিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। এর পর চট্টগ্রাম ও আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রচণ্ড উত্তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে স্থানীয়রা বলছে, রেললাইনের কালভার্টের (ব্রিজ নং ২০৮) উপর ঝুঁকিপূর্ণ স্লিপার ভেঙে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে বিষয়টি জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রবিবার বিকেলে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) সাইফুল ইসলাম এ কমিটি গঠন করেন।