প্রান্তিক তরুণদের নিয়ে একশনএইড বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন
জলবায়ু সুবিচারের লক্ষ্যে দেশের প্রান্তিক অঞ্চল থেকে তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশে একটি জাতীয় যুব সম্মেলন আয়োজন করেছে একশনএইড বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এই যুব সম্মেলনে অংশ নেন ঢাকা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট অঞ্চলের শতাধিক তরুণ কর্মী।
‘বিল্ডিং এজেন্সি অব ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট একশন’ প্রকল্পের অধীনে জলবায়ু সুবিচারের লক্ষ্যে ঢাকা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের তরুণেরা বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে। তাদের সবাইকে একটি নেটওয়ার্কে যুক্ত করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করার শপথ নিতে এই যুব সম্মেলনের আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ।
সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ছিল একটি যুব-নেতৃত্বধীন প্যানেল ডিসকাশন যেখানে নয়জন তরুণ প্যানেলিস্ট বাংলাদেশে জলবায়ু কেন্দ্রিক অ্যাক্টিভিজম নিয়ে কথা বলেন।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের প্রধান সমন্বয়কারী সোহানুর রহমানের সঞ্চালনায় প্যানেলে ছিলেন বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের প্রধান নির্বাহী জান্নাতুল মাওয়া, থ্রিফিফটিডটওআরজি থেকে আমানুল্লাহ পরাগ, ব্রাইটার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ফারিহা সুলতানা অমি, লাল সবুজ সোসাইটি এর ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোকাল-আল মামুন রাকিব, এলকয় বাংলাদেশ থেকে মেহেদি হাসান বাপ্পী, আইআইডি থেকে প্রবীণ হেনরি ত্রিপুরা, ইউএনইপি’র ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি প্যানেল মেম্বার জুহাইর আহমেদ কৌশিক ও উই ক্যান কক্সবাজারের প্রতিষ্ঠাতা ওমর ফারুক জয়।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণদের কর্মকাণ্ড, কাজের প্রতিবন্ধকতা, সুযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সেশনের প্রশ্নোত্তর অংশে যোগ দেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করতে তরুণদের বড় পরিকল্পনা করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফারাহ্ কবির বলেন, ‘দেশের জলবায়ু নিয়ে অনেক কাজ করার আছে। তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে নেতৃত্ব দিতে পারে। আমাদের লক্ষ্য একেবারে দেশের শেষ প্রান্ত থেকে তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তোলা। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বড় একটা নেটওয়ার্ক তৈরি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে বলে আশা করছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তরুণ নেতাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় করে পরিকল্পনা কর, বড় পরিসরে কাজ কর এবং গবেষণায় মনোযোগ দাও।’
প্যানেল ডিসকাশনের পাশাপাশি তরুণরা বিভিন্ন প্রটোটাইপ ও পোস্টারের মাধ্যমে তাদের কাজগুলো তুলে ধরেন এবং একটি দলগত আলোচনার মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত তরুণদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারেন। আয়োজনটি শেষ হয় একশনএইড বাংলাদেশের ইয়ং পিপল টিমের প্রধান নাজমুল আহসান ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আবদুর রহমান খানের বক্তব্যের মাধ্যমে।
মো. আবদুর রহমান খান তরুণদের এই নেটওয়ার্কের অধীনে একসঙ্গে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। নাজমুল আহসান তাদের কার্যক্রমের প্রসংশা তাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে অনুরোধ জানান।
‘বিল্ডিং এজেন্সি অব ইয়ুথ ইন ক্লাইমেট অ্যাকশন’ প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তন-কবলিত অঞ্চলের তরুণদের সক্ষমতা উন্নয়নে শুরু হয়েছিল, যাতে তারা এই পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবিলা করতে পারে। এই প্রকল্পটি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় একশনএইড বাংলাদেশ তাদের তিনটি ইয়ুথ-লিড সংগঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছে।
উল্লেখ্য, একশনএইড ফেডারেশনের সহযোগী সদস্য একশনএইড বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮৩ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। জলবায়ু সুবিচার, লিঙ্গ সমতা, নারী ও শিশুদের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিতকরণ এবং প্রান্তিক এলাকার সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে নিয়ে একটি সমানাধিকারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রায় চার দশক ধরে বাংলাদেশে কাজ করে চলেছে এই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটি।