আ. লীগের কমিটিতে বেড়েছে নারী নেতৃত্ব
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তবে তুলনামূলক বিচারে এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারী নেতৃত্ব আগের চেয়ে বেড়েছে।
সর্বশেষ সম্মেলনে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির মধ্যে ৭৮ জনের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ২০ জনই নারী।
সে অনুযায়ী নারী নেতৃত্বের হার হয়েছে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের কমিটিতে এই হার ছিল ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। শূন্য থাকা তিনটি পদে কোনো নারী সদস্য যুক্ত হলে স্বাভাবিকভাবেই এর হার আরও বাড়বে। তা ছাড়া দলটির সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আওয়ামী লীগের ৭৮ সদস্যবিশিষ্ট নবনির্বাচিত কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সভাপতিম-লীর ১৭টি পদের মধ্যে ১৬ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ। বিদায়ী কমিটিতে সভাপতিম-লীর ১৭ সদস্যের মধ্যে ৩ জন নারী ছিলেন। তাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মারা গেলে পুরুষ সদস্য নির্বাচন করে সেই পদ পূরণ করা হয়েছিল। পরে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা গেলে সিমিন হোসেন রিমিকে নির্বাচন করা হয়। নতুন কমিটিতে রিমিসহ ছাড়া বাকি দুই নারী হচ্ছেন আগের কমিটির বেগম মতিয়া চৌধুরী ও নতুন করে নির্বাচিত হওয়া সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। সৈয়দা জেবুন্নেছা ২০১২ সালের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন।
এ ছাড়া সম্পাদকম-লীর মধ্যে যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনি, অর্থ ও পরিকল্পনাবিয়ষক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, শিক্ষা ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন নাহার এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা একই পদে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন। অবশ্য আগের সম্মেলনে মেহের আফরোজ চুমকি মহিলাবিষয়ক সম্পদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের সম্মেলনের কয়েক দিন আগে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তার শূন্য পদে জাহানারা বেগমকে নির্বাচিত করা হয়। নতুন সম্মেলনেও তিনি এ পদটি আবারও পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্যের ২৮টি পদের মধ্যে ২৭ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিতে আগের কমিটির নারী সদস্য বেগম আখতার জাহান, মেরিনা জাহান, পারভীন জামান কল্পনা, সফুরা বেগম রুমি, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, মারুফা আক্তার পপি ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা সবাই নতুন কমিটিতে মনোনয়ন পেয়েছেন। এর বাইরে অভিনেত্রী তারানা হালিম নতুন করে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনয়ন পেয়েছেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে ওই সময়ের মধ্যে প্রায় কোনো দলই ইসির এ শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তবে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত দলটির সম্মেলনে গঠনতন্ত্র ফের সংশোধন করে নারী নেতৃত্বের শর্ত পূরণের সময় বাড়ানো হয়। এ ছাড়া দলটি ইসির কাছে চিঠি দিয়েও শর্ত পূরণের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। অবশ্য নির্বাচন কমিশনও এই শর্ত পূরণের সময় ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে আরপিও সংশোধনীর প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। আরপিও এখনো সংশোধন হয়নি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগে নারীর অংশগ্রহণ অন্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে বেশি। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়েও তাদের নেতৃত্ব বিস্তার করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।