কোনো দলকে বাঁচাতে জাপা রাজনীতি করবে না: জি এম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘কোনো বিশেষ দলকে বাঁচাতে জাতীয় পার্টি রাজনীতি করবে না। আমরা আমাদের নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাব। জনগণের ডিমান্ড বিবেচনা করে রাজনীতি করব। আমরা গণমানুষের স্বার্থ বিবেচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
আজ দুপুরে দলটির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ের মিলনায়তনে পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় পার্টির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই সকল জেলা ও উপজেলার কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে। জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা, পার্টির ইফতার মাহফিল এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করা হবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
প্রেসিডিয়াম সভা শেষে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আগামী এপ্রিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হবে। সকল জেলা-উপজেলার নেতারা এই সভায় উপস্থিত থাকবেন। সেখানে জাতীয় পার্টির সার্বিক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হবে। আগামী আগস্টের মধ্যে ৩ থেকে ৫ সদস্যের ছোট ছোট কমিটি করে জেলায় জেলায় পাঠানো হবে। তারা দলের সাংগঠনিক শক্তি পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট দেবেন। আগামী আগস্টের মধ্যেই সকল জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১২ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করার জন্য সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। অমার্জনীয় অপরাধের জন্য যারা বহিষ্কার হয়েছেন তারা বাদে অন্য বহিষ্কৃতরা ক্ষমা চাইলে পার্টি চেয়ারম্যান যেন সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিবেচনা করেন সে বিষয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘দল থেকে বহিষ্কৃত অনেকেই আবারও দলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে বহিষ্কার করার জন্য কাজী ফিরোজ রশীদের বাসায় মিটিং হয়েছিল। তাই কাজী ফিরোজ রশীদকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তথাকথিত সম্মেলন কমিটির সভায় বক্তৃতা করায় সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারণ, বাবলা সাহেব নিজেই পার্টি থেকে চলে গেছেন। আমাদের পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে আমাদের স্পর্শকাতর সম্পর্ক। তাই, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১২। এই দলের মার্কা লাঙ্গল। তথাকথিত সম্মেলন যারা করছে তারা ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছিল যে, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাদের ওই চিঠিকে নাকচ করে দিয়েছে। আমাদের দলের বাইরে কেউ যদি মহাসম্মেলন করে সে বিষয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। জাতীয় পার্টির নামে ব্রাকেটে যদি কেউ মই মার্কা, আম মার্কা, জাম মার্কা, বেগুন মার্কা করে, তাহলে করতেই পারে। সে ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’
যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পাটি চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ অ্যাড. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, অ্যাড. সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু, ফখরুল ইমাম, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, নাসরিন জাহান রতনা, আব্দুর রশীদ সরকার, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (অব.), এ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দ দিদার বখ্ত, এমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, শেরীফা কাদের, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. আশরাফুজ্জামান আশু, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নাহার বেগমসহ আরও অনেকে।