পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে: জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৯
শেয়ার :
পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে: জি এম কাদের

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘আমাদের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, প্রমাণ হয়েছে, অগ্নি নির্বাপণে বর্তমান সক্ষমতা একেবারেই অপ্রতুল। এতে প্রতিবছর শতশত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। আজ পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে।’

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন জি এম কাদের।

জি এম কাদের বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের নির্মম বাস্তবতা থেকে জাতি মুক্তি চায়। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, গতবছর ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাকাণ্ডে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ১০২ জন আর আহত হয়েছেন ২৮১ জন। যদিও সাধারণ মানুষের ধারণা এই সংখ্যা আরও বেশি।’

বিবৃতিতে তিনি দেশে বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা করে জানান, গতকাল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকায় একটি চিনির মিলে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অগ্নি নির্বাপণ কর্মীদের অসহায় মনে হয়েছে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ৪৬ জন। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন আরও কয়েকজন। ২০১০ সালের ৩ জুন রাতে চানখারপুলের নিমতলীতে ক্যামিকেলের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছে অর্ধশত এবং কারখানা ও বাড়ি পুড়েছে ২৩টি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুরিহাট্টা এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা যায়। আহত হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ২৬ জন, আহত হয়েছে অন্তত ৭০ জন। ২০২১ সালের ২৭ জুন সন্ধ্যায় মগবাজারের রাখি নীড়ে অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ১২ জন, আহত দুই শতাধিক। ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্যবসায়ীরা। ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ২২৬টি দোকান পুড়ে ক্ষতি হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার।’ 

বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা আরও বলেন, ‘শুধু অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ ও সম্পত্তি হানি হচ্ছে তাই নয়। এ দেশের মানুষ আজ কোথাও নিরাপদ নেই। দুর্ঘটনা নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেলে কাটা পড়ে মৃত্যু, লঞ্চ দুর্ঘটনায় পানিতে ডুবে মারা যাওয়া হরহামেশাই ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনার ফিরিস্তি ও এতে হতাহতের সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন উচ্চতায় উঠছে। দুর্ঘটনা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে এ ধরনের ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে, সুশাসনের অভাব। দেশের কোনো স্তরে আজ জবাবদিহিতা নেই। দুর্নীতির বিস্তার হচ্ছে অপ্রতিরুদ্ধ গতিতে। ক্ষমতা বা অবৈধ অর্থের যোগান থাকে আজ কারও নিয়ম-কানুন মানার প্রয়োজন নেই।’  

জি এম কাদের বলেন, ‘কোনো ভাল কিছু ঘটলে তার কৃতিত্ব নেওয়ার ও দেওয়ার লোকের অভাব নেই। দুর্ঘটনার জন্য কেউই দায় নিতে চায় না। একে অন্যের ঘারে দোষ চাপিয়ে সময়ক্ষেপণ করে। তাই দুর্ঘটনা আবার স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে অন্য কোথাও ঘটতে শুরু করে।’