হারুনের হুঁশিয়ারি /
কোনো বড় ভাই ছাড় পাবে না
শুধু কিশোর গ্যাং সদস্য ও ইভটিজার নয়, তাদের আশ্রয়দাতা কোনো বড় ভাইও ছাড় পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি ডিবি। এ বিষয়ে জানাতে আজ ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাজা (৩৫), মো. জালাল (২৫), মো. মৃদুল (২৬), মো. জাহাঙ্গীর (৩৫), মো. শামিম মিয়া (২৪), মো. শহিদ (২৫), মো. শিমুল (২৫), মো. মনিরুল ইসলাম (২৭), মো. সোহেল খান (২৩) ও নুর মোহাম্মদ (২০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় ডিবি।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তারা ভাগ হয়ে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ করত। তারা ছিনতাইয়ের জন্য লেগুনা ব্যবহার করে। লেগুনা চালক ও হেলপারও তাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কিছু বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে তারা এসব কাজ করে আসছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে এরা, আর দিনের বেলা বড় ভাইদের সঙ্গে ঘোরে। আমরা বেশ কয়েকজন বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। যে দলেরই হোক না কেন, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
ডিএমপির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জন । ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘রাজধানীর উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা বেশ সক্রিয়। এই সব গ্রুপের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করছেন। তারা দিনে দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল টান দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উঠতি বয়সী মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির তেজগাঁও বিভাগ কাজ শুরু করেছে। মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিশোর গ্যাং ও ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় আমাদের অভিযান চলবে। ছিনতাইকারী ও বড় ভাইদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করছি।’
কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব কি না, জানতে চাইলে ডিএমপি ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ডিবির ৪০টিরও বেশি চৌকস টিম রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কাজ করবে। এখানে কোনো বড় ভাই ছাড় পাবে না। আমরা যদি তাদের পাই, আর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ, ছিনতাই, ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটায় তাহলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
হারুন জানান, গ্রেপ্তার ১০ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রাজার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ও মৃদুলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে।
