আমতলিতে চেয়ারম্যানের ইন্ধনে ধানী জমিতে খাল খননের অভিযোগ, বন্যার শঙ্কা
বরগুনার আমতলি উপজেলার আমতলি ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধার ইন্ধনে সরকারি অনুমতি ও প্রকল্প ব্যতিরেকেই সম্পূর্ণ ধানী জমিতে অপরিকল্পিতভাবে খাল কাটার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার আমতলি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের চলাভাঙ্গা মৌজায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে প্রায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০-১৫ ফুট প্রস্থের একটি নতুন খাল খনন করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় জনগণ ক্ষুব্ধ। এলাকাবাসী বলছেন, খালটি খনন করা হলে বর্ষা মৌসুমে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ক্ষতি হতে পারে ফসলের।
খাল খনন বন্ধের জন্য এলকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন চলাভাঙ্গার আমতলী এলাকার ভুক্তভোগী মোসা. শামসুন নাহারের পুত্র মুহাম্মদ ফারুক উল বারী।
এই খাল খননের বিষয়ে কিছুই জানে না স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, সরকারি অনুমতি ব্যতিত খাল খননের খবর শুনেছি। এসিল্যান্ডকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তদন্ত রিপোর্টের পেয়ে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু আমাদের সময়কে বলেন, ‘যারা এই খাল খনন করছেন তারা কোনো নিয়ম-কানুন, আইন-আদালত মানে না, তারা বেপরোয়া। এদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমি খুব যন্ত্রণা ভোগ করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের সঙ্গে আছি। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী কাউকে থানায় অভিযোগ করতে হবে।’
সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘এভাবে খাল খনন করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় খালের দুই পাড়ের মানুষ। তাদের রেকর্ডিয় সম্পত্তির উপর দিয়ে খাল কাটলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার সেচ সুবিধার প্রয়োজনে অনেক সময় ব্যক্তি মালিকানাধীন রিকর্ডিয় জমির উপর দিয়ে খাল খনন করে থাকেন। সেক্ষেত্রে সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। চেয়ারম্যান যে কাজটি করছেন, সেটি আইনসিদ্ধ নয়।’
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার মৃধার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘এলাকার চাষিদের ফসলাদীর পানির ব্যবস্থার জন্য তাদের অর্থায়নে খাল খনন করা হচ্ছে, অনুমোদন নেওয়া হয়নি তবে জনস্বার্থে ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়েই বাকি খনন শেষ করবো। অন্যের রেকর্ডের জমির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে বিগত দিনে খাল ছিলো।’
তবে স্থানীয় মেম্বার হাবিবুর রহমান জানান, ‘চেয়ারম্যান তার নিজস্ব অর্থায়নেই খালটি খনন করাচ্ছেন, তিনি প্রশাসনে অনুমতি ছাড়া কাজ করানো ভুল করেছেন।’