আসন্ন উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে: এলজিআরডি মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২৩
শেয়ার :
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে: এলজিআরডি মন্ত্রী

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম। আজ শুক্রবার ঢাকার এফডিসিতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।  

মন্ত্রী বলেন, দলীয় প্রতীক ছাড়া আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবার আশা থাকলেও সংঘর্ষের আশঙ্কাও রয়েছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমি কাউকে প্রকাশ্যে এবং গোপনে মনোনয়ন দিব না। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ইমেজ সংকট রয়েছে। স্থানীয় সরকারের পদগুলোকে যদি মর্যাদাপূর্ণ করা যায় তাহলে ভালো মানুষেরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো কনফ্লিক্ট নেই। সংসদ সদস্যরা পদাধিকার বলেই উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে থাকে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।’

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘দুনীর্তি আমাদের দেশে কমবেশি সব জায়গাতে বিদ্যমান। দুনীর্তি বাদ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা কঠিন। কাজ করতে গেলে দুনীর্তি হবেই। তবে ম্যাক্রো লেভেলে যে ধরনের দুনীর্তি হয় সেটা খুবই খারাপ। দুনীর্তির জন্য আমি নিজেও অনেক কাজ করতে পারি না। দুনীর্তিবাজ ব্যক্তি সুখি হতে পারে না। বর্তমানে যে মাত্রার দুনীর্তি হচ্ছে তা কমানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। দুনীর্তি প্রতিরোধে সবাইকে শপথ গ্রহণ করতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ সামাজিক সুরক্ষা খাতের সুবিধাভোগী নির্বাচনে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের যে অভিযোগ ছিল তা এখন অনেক কমে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেনের নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। আমাদের দেশে তার মাত্রা বেশি।’

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘গত ৫২ বছরে দেশের অনেক অগ্রযাত্রা হলেও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনায় সুশাসন তৈরিতে এখনো ঘাটতি রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অসৎ মানুষদের আধিক্য কমানো সম্ভব হচ্ছে না। দুঃস্থ, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও কাবিখাসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে প্রদত্ত নানান সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তরায় সৃষ্টি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবার সরকার দলীয় প্রতীক বাদে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে আরও বেশি সৎ, সজ্জন, প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করার সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা যায়। আগে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় সংঘর্ষ-সংঘাত এড়াতে সমাজের শিক্ষিতসহ, সৎ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেন না। ফলে জনগণ তাদের প্রিয় ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো।’

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে সেটি ইতিবাচক। তবে এর সুফল পাওয়া যাবে কি না তার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে হলে স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করা আবশ্যক। কিন্তু দেশে সুশাসন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে অর্থপাচার, অনিয়ম-দুনীর্তি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করা সম্ভব না হলে শুধুমাত্র স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না।’

 তিনি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউএনওদের মধ্যে ক্ষমতা প্রয়োগে যে অলিখিত দ্বন্দ্ব রয়েছে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সার্বিক গতিশীলতায় এটি একটি বড় অন্তরায়। একই সাথে সংসদ সদস্যদেরও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের ওপর প্রভাব বিস্তারের যে অভিযোগ রয়েছে তা দূর করতে হবে।’

‘স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার মাধ্যমেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ও বিজিত দলকে ক্রেস্ট, ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।