২২৫৭ যাত্রী নিয়ে বিশেষ ট্রেন যাবে ভারতে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:০১
শেয়ার :
২২৫৭ যাত্রী নিয়ে বিশেষ ট্রেন যাবে ভারতে

রাজবাড়ী থেকে দুই হাজার ২৫৭ জন যাত্রী নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে দেশের একমাত্র বিশেষ ট্রেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এ ট্রেনটি আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় ছেড়ে যাবে। 

রাজবাড়ীর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের হযরত আলী আব্দুল কাদের সামশুল কাদের সৈয়দ শাহ্ মোরশেদ আলী আল্ কাদেরী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আল্ বাগদাদী আল মেদিনীপুরী (আ.)-এর ১২৩তম বার্ষিক ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের রেলওয়ে বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ২৪টি বগির একটি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ করা হয়।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. আব্দুল আওয়ালের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতের মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওরশে আঞ্জুমান কাদেরীয়ায় বাংলাদেশের মুরিদদের যোগদানের জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রাজবাড়ী থেকে ভারতের মেদিনীপুর পর্যন্ত একটি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওইদিন সকালে ২২টি সাধারণ বসার কোচ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণির লাগেজ কোচের সমন্বয়ে মোট ২৪ কোচের ভারতীয় খালি রেক দর্শনা থেকে উন্মুক্ত পথে রাজবাড়ী আনা হবে। 

রাজবাড়ী স্টেশনে স্পেশাল ট্রেনটি ওয়াটারিং ও ক্লিনিংয়ের ব্যবস্থা করার পর ওইদিন রাত ১০টায় স্পেশাল ট্রেনটি রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে দর্শনা বর্ডার দিয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি গেদে পৌঁছাবে এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর পৌঁছাবে। স্পেশাল ট্রেনটি আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের সময় রাত ১০টায় মেদিনীপুর থেকে ছেড়ে ভারতের গেদে বর্ডার দিয়ে দর্শনা হয়ে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজবাড়ী ফিরে আসবে। একই তারিখ উন্মুক্ত পথে ভারতীয় খালি রেক রাজবাড়ী স্টেশন থেকে দর্শনায় পাঠানো হবে।

স্পেশাল ট্রেনটি পরিচালনার জন্য দর্শনা-রাজবাড়ী-দর্শনা রুটে বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকোমোটিভ কাজ করবে। ডিটিও, ডিএমই (লোকো), পাকশী ওই স্পেশাল ট্রেনে দর্শনা-রাজবাড়ী-দর্শনা পর্যন্ত গার্ড ও ক্রুর ব্যবস্থা করবেন।

১৪ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি এটিও-১, পাকশী এবং এসিও (দক্ষিণ), পাকশী, রাজবাড়ী ও দর্শনা স্টেশনে অবস্থান করে সার্বক্ষণিক সুষ্ঠু ও সময়ানুবর্তিতার সঙ্গে ট্রেন পরিচালনা তদারকি করবেন। ভারতীয় খালি রেক দর্শনা থেকে উন্মুক্ত পথে রাজবাড়ী আনা-নেওয়া এবং স্পেশাল ট্রেনটি পরিচালনার জন্য পাকশী কন্ট্রোল অফিসে সার্বক্ষণিক ট্রেন মনিটরিং তদারকির জন্য ডিটিও, পাকশী কর্মকর্তা নিয়োজিত করবেন। মুসল্লিদের রেলযোগে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে রাজবাড়ী স্টেশনে পর্যাপ্ত সংখ্যক জিআরপি ও আরএনবি সদস্য নিয়োজিত করতে হবে।

জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে মেদিনীপুরে নূর নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ৩২তম ও বড় পীর গাউসুল আযম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (আ.) এর ১৯তম অধস্তন পবিত্র বংশধর আলী আব্দুল কাদের সামশুল কাদের হযরত সৈয়দ শাহ মোর্শেদ আলী আল কাদেরী আল হাসানী আল হুসাইনী আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী (আ.) মশহুর নাম “মওলাপাক” এঁর ১২৩তম বার্ষিক পবিত্র ওরশ শরীফ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে উৎযাপিত হবে। এবার রাজবাড়ী স্টেশন থেকে ২ হাজার ২৫৭ জন ওরশ যাত্রী ট্রেনে মেদিনীপুর যাবেন। 

আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া রাজবাড়ীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ কাদেরী খোকন বলেন, ওরশ শরীফে যোগ দিতে এ বছর এক হাজার ৩১৮ জন পুরুষ, ৮৫৭ জন মহিলা এবং ৮২ জন শিশুসহ মোট দুই হাজার ২৫৭ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে ১৯০২ সাল থেকে এ স্পেশাল ট্রেনটি চলাচলের ব্যবস্থা করে আসছেন। এর মধ্যে দেশ ভাগ হয়ে গেলেও ঐতিহ্য রক্ষায় দুই দেশের রেল কর্তৃপক্ষ এ সেবা চালু রেখেছেন। তবে করোনা মহামারির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে ওরস স্পেশাল ট্রেনটি বন্ধ ছিল।