কৃষক বিক্ষোভ ঠেকাতে ড্রোন ব্যবহার করছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:১৯
শেয়ার :
কৃষক বিক্ষোভ ঠেকাতে ড্রোন ব্যবহার করছে ভারত

কৃষকদের বিক্ষোভে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের দিল্লি সীমান্তবর্তী এলাকা। রাজধানীর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সীমান্তে হাজার হাজার কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোনও। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

আজ মঙ্গলবার সকালে পাঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব থেকে কৃষকদের বিক্ষোভ এবং ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে অংশ নেয় কয়েক হাজার ট্রাক্টর। পাঞ্জাবের সীমানা পর্যন্ত আসতে কৃষকদের কোনো অসুবিধা হয়নি। কিন্তু পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যে শম্ভু সীমানায় আসতেই বাধা পান কৃষকরা।

কৃষকদের দাবি, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আইন করতে হবে। সেই আইন অনুসারে প্রতিবছর প্রধান ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে সরকারকে। কৃষকদের ঋণ মাফ করতে হবে। কৃষকদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

এর আগে ২০২১ সালে কৃষকেরা পুলিশ ও প্রশাসনের যাবতীয় অবরোধ সরিয়ে দিয়ে দিল্লি সীমান্তে এসে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাদের সেই প্রতিবাদ এক বছর স্থায়ী হয়েছিল। সেসময় কৃষকদের দাবি মেনে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় মোদি সরকার। এবার দুইশটি কৃষক সংগঠন ‘দিল্লি চলো’ ডাক দিয়েছে।

ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভস্থলে ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। শত শত কৃষক ও সাংবাদিক আশ্রয় খুঁজতে দৌঁড়াচ্ছেন। 

এনডিটিভি জানায়, দুপুরের দিকে আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। অন্তত দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। তবে কৃষকদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহিংস আলামত পাওয়া যায়নি।

দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে সম্ভু সীমান্তে পুলিশ ড্রোন থেকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। ভারতে এই প্রথমবার বিক্ষোভ সামলাতে ড্রোন থেকে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।  

তবে এবার কৃষকরাও প্রস্তুত রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। প্রচুর ডিজেল এবং খাবারদাবার নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখাতে যাচ্ছেন। অন্তত ছয় মাস তাদের যাতে কোনো অসুবিধায় না পড়তে হয়, তার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারা।

পাঞ্জাবের গুরদাসপুরের কৃষক হরভজন সিং এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, ‘ছুঁচ থেকে শুরু করে পাথর ভাঙার যন্ত্র পর্যন্ত সবকিছু আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের কাছে এতটা ডিজেল আছে যে, আমরা কিছুটা হরিয়ানার ভাইদেরও দিতে পারব।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষক নেতাদের আলোচনা হয়। সেখানে কৃষরদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে সরকার রাজি হয়। ইলেকট্রিসিটি আইন বাতিল করার বিষয়টি নিয়েও ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়। কিন্তু প্রধান তিন দাবি ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ করা ও ঋণ মকুব নিয়ে সরকার কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি হয়নি। ফলে আলোচনা ভেস্তে যায়।