প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেকে ‘গুম’ করেছিলেন যুবক!
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে দেড় বছর আত্মগোপনে ছিলেন। এ সময় দায়ের করা হয়েছে অপহরণ মামলা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। নোয়াখালীতে এমন নাটক সাজানো যুবক শের আলীকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ সোমবার ভোরে কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের ‘মারছা’ বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
নোয়াখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার শের আলী কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন আত্মসাৎ করতে দীর্ঘ এক বছর সাত মাস আত্মগোপনে ছিলেন শের আলী। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি পরিবারের লোকজনকে দিয়ে প্রতিপক্ষের ১২ জনকে আসামি করে একটি গুম ও অপহরণ মামলা দায়ের করে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় শের আলী সিএনজি চালানোর সুবাদে পরিচয় হয় হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারকের সঙ্গে। গত ২০২২ সালের ৫ জুলাই মোবারক একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাস্তার মাথার মৌলভীবাজার মোটরসাইকেল শো-রুমে যান। এসময় মোবারকের মোটরসাইকেল ক্রয়ের এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল শের আলীর কাছে ছিল। মোটরসাইকেল ক্রয় করতে আইডি কার্ড ছবি লাগবে জানার পর টাকা ও মোবাইলটি শের আলীর কাছে রেখে বাসায় যান মোবারক। এ সুযোগে টাকা ও মোবাইল নিয়ে ওইস্থান থেকে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি কবিরহাটে চলে যান শের আলী।
পরে এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে প্রথমে একবার সালিশ বৈঠক হয়, কিন্তু বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় অভিযুক্ত শের আলীকে ৭ জুলাই হাতিয়ার হরণি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই এলাকা থেকে কৌশলে পালিয়ে যান শের আলী। পরে তিনি আত্মগোপনে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগসাজস করে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু আদালতে একটি গুম ও অপহরণ মামলা করে।
ওই মামলায় মোবারকসহ আসামি করা হয় তাদের সঙ্গে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ থাকা শাছুল হক মাঝিসহ মোট নয়জনকে। পরবর্তীকালে মামলাটি কবিরহাট থানা হয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে ওসি নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মগোপনে থাকা শের আলীর অবস্থান কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। সবশেষ তিনি কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে আছে নিশ্চিত হয়ে ওই এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। ‘মারছা’ বাসের চালক হিসেবে এতদিন চাকরি করছিলেন বলে আটকের পর তিনি স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’