সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, মর্টারশেলের আতঙ্ক

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৩০
শেয়ার :
সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, মর্টারশেলের আতঙ্ক

মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘাত এখনো চলছে। টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদের ওপারে গুলি বর্ষণ, মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ না শোনা গেলেও এপারে তৈরি হয়েছে অবিস্ফোরিত মর্টারশেল আতঙ্ক। আজ শনিবার সকালেও ঘুমধুম সীমান্তে অবিস্ফোরিত ২টি মর্টারশেল পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ ভোরে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কুমিরখালী এলাকায় সংঘর্ষে গুলি বর্ষণ ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সীমান্তের এপারে লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং এলাকায় কয়েকটি গুলি এসে পড়ে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার সারাদিন ও রাতে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে, শনিবার ভোরে আবার গুলি ও মর্টারশেলের বিকট আওয়াজ শোনা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল।

স্থানীয়দের দাবি, সীমান্তের ওপারে উত্তর দিক থেকে ক্রমশ দক্ষিণ দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে সংঘাত। শনিবার ভোরে হোয়াইক্যং লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কানজর পাড়া সীমান্ত দিয়ে পর পর বিকট শব্দ শোনা গেছে। এখন বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে নতুন করে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সে সময় এপারে গুলি এসে পড়েছিল।

তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে ঘুমধুম সীমান্তে একের পর এক অবিস্ফোরিত মর্টারশেল পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার সকালেও নতুন করে ২টি অবিস্ফোরিত মার্টারশেল পাওয়া গেছে। যা লাল পতাকা দিয়ে ঘীরে রেখেছে বিজিবি। এর আগে আরও ২টি মর্টারশেল পাওয়া গিয়েছিল। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশের ভূ-খন্ডের ক্ষেত-খামার, কৃষি জমিতে মিলছে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেল। অবিস্ফোরিত এসব গোলা নিয়ে খেলা করছে সীমান্তের বাসিন্দা ও শিশুরা। ফলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

শনিবার সকালে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে মর্টারশেল পাওয়া রাজিয়া বলেন, ‘কৃষি জমিতে কাজ করছিলাম। তখন দেখি, শিশুরা লম্বা লোহার রড়ের মতো একটি জিনিস নিয়ে খেলছে। তখন তাদের কাছ থেকে এটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসি। পরে আমার স্বামী বলে, এটি অস্ত্র। তার পরপরই বিজিবিকে সেটা দিয়ে দেই।’

ছৈয়দ নুর নামে একজন জানান, মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গুলিতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি এক নারীসহ দুজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে অন্তত ৮ জন।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে।