সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে ধর্ষণ, আসামি মেহেরাজের স্বীকারোক্তি
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণ মামলার আসামি মেহেরাজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৮ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলাম ওই আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জবানবন্দি দেওয়া আসামি মেহরাজ উদ্দিন (৪৮) চরওয়াপদা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও মামলার প্রধান আসামি আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বারের সহযোগী।
মামলার প্রধান আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বারের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চর জব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালত রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি করবেন।
এদিকে, আজ বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আসামিরা চুরি করতে নয় গৃহবধূকে ধর্ষণের উদ্দেশে তাদের ঘরে সিঁধ কেটে ঢুকেছে। চুরিটা ছিল ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে আসামিদের কৌশল। এ মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন, চরকাজী মোখলেছ গ্রামের মেম্বার আবুল খায়ের মুন্সি (৬৭), একই গ্রামের মেহেরাজ (৪৮) ও গরু বেপারি মো. হারুন (৪২)। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা এক আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মুন্সি মেম্বার ওই গৃহবধূকে নাতনী বলে সম্বোধন করতেন। দীর্ঘদিন ধরে মুন্সি মেম্বার ওই নারীকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আসছিলেন। নিজের স্ত্রী নেই তাই তার প্রতি খেয়াল রাখতে বলে গৃহবধূকে একাধিকবার কুপ্রস্তাবও দিয়েছেন মুন্সি। কিন্তু ওই নারী কোনো সাড়া না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন মুন্সি। কিছুদিন আগে গরু বিক্রি করে গৃহবধূর স্বামী এবং ওই টাকা তাদের ঘরে আছে এটাকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে মেহেরাজকে লোভে দেখিয়ে মুন্সি ও হারুন তাদের ঘরে প্রবেশের পরিকল্পনা করে। যদিও তাদের দুইজনের উদ্দেশ্য ছিল গৃহবধূকে ধর্ষণ করা।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সিঁধ কেটে ওই গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে তারা। এ সময় মুন্সি ও হারুন প্রথমে গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। একই সময় মেহেরাজ পাশের কক্ষে থাকা গৃহবধূর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে একই কায়দায় ধর্ষণ করে। পরে তারা ঘটনাটি চুরি বলে চালিয়ে নিতে ওই ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু গৃহবধূ ও তার মেয়ে মুন্সি ও হারুনকে চিনে পেলেন। সিঁধ কাটায় ব্যবহৃত কোদাল, একটি দা এবং ঘটনার সময় ব্যবহৃত মুন্সি মেম্বারের মানকি টুপি ও প্যান্ট জব্দ করা হয়েছে।