রোগীর ছেলেকে কক্ষে আটকে পেটালেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগীর ছেলেকে মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার পর হাসপাতালের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে অবস্থিত পুলিশ বক্সের পরিদর্শক গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেন। আহত ওই যুবকের নাম সুমন পারভেজ রিপন। তিনি নগরীর বোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এই ঘটনার পর আহত যুবককে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের সামনে বসিয়ে রাখা হয়। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বিষয়টি জানাজানির পর সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়ে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাকে পরিচালকের রুমে ডেকে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী সুমন বলেন, ‘আমার মায়ের বুকে সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রামেক হাসপাতালের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরিবারের সবাই আমরা বয়স্ক মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। হাসপাতালের চিকিৎসক তার নানান টেস্ট দেন। ওই রিপোর্ট নিয়ে সকালে চিকিৎসকের কাছে যাই। এ সময় চিকিৎসক আমার রিপোর্ট না দেখে ইন্টার্ন ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমি তাকে আবারও অনুরোধ করি, আমার মায়ের কী হয়েছে তা রিপোর্ট দেখে জানাতে। এ সময় তারা দুর্ব্যবহার করে আমাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিনিয়র ওই চিকিৎসক চলে গেলে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে রিপোর্ট নিয়ে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত তাদের কক্ষে ডাকেন। আমি তার কথা মতো ওই কক্ষে যাবার সাথে সাথে রুমের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানে ১৫ থেকে ২০ জন ইন্টার্ন ডাক্তার আমার ওপর হামলা করেন। আমার বুকে, পিঠে ও হাত-পায়ে লাঠি ও হাত দিয়ে মারতে শুরু করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বলে সিজার নিয়ে আয় ওর হাত-পা আর গলা কেটে ফেলব। এভাবে ১০ মিনিটের মতো তারা আমার ওপর নির্যাতন চালান। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
ভুক্তভোগী যুবক বলেন, ‘ঘটনার পর হাসপাতালের পরিচালক আমাকে তার কক্ষের সামনে বসিয়ে রাখেন। সাংবাদিকরা আসলে এক ঘণ্টা পর আমাকে নিয়ে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে যান পরিচালক। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আবারও আমাদের ওপর চড়াও হন। হাসপাতালে মাকে নিয়ে আমি এখন ভয়ের মধ্যে আছি। এই ঘটনায় আমি আইনের আশ্রয় নেব। আমার যদি কোনো দোষ থাকত, তবে তারা আমাকে পুলিশে দিয়ে দিতে পারত। আমি শুনেছি এই হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের সাথে ঘনঘন এমন ঘটনা ঘটে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক নেতা ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ কুমার মন্ডলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে দায়ী যে হবে, তার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি এক পক্ষের কথা শুনেছি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কথাও শুনব।’