ময়মনসিংহ-জামালপুর-নেত্রকোণা রুটে বিআরটিসির বাস চালুর দাবি
ময়মনসিংহ বাস ডিপো প্রতিষ্ঠার পর কয়েকটি রুটে আধুনিক যানবাহনে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যাত্রী পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের সঙ্গে এখনো জামালপুর ও নেত্রকোণা জেলা সদরে চলাচলের জন্য ভালোমানের কোনো বাসসার্ভিস নেই বললেই চলে। আরামদায়ক স্বল্প ভাড়ায় প্রশিক্ষিত ড্রাইভারদের দ্বারা অনেকটা নিরাপদ উপায়ে বিআরটিসি বাস চালনার পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত দাবি পূরণ করায় দিন দিন বিআরটিসি বাসের চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাইতো নতুন নতুন রুটে বাস চালানোর জন্য প্রস্তাব আসছে।
ময়মনসিংহ থেকে জামালপুর আঞ্চলিক সড়কটি প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত করায় অনেকটা দ্রুতগতিতে ও স্বাচ্ছেন্দে যানবাহন চলাচল করলেও দুটি জেলার মধ্যে সরাসরি বাস সার্ভিস নেই। এই সুযোগে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাত্রীরা মারাত্মক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রুটে প্রতিদিন শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।
বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে জামালপুর জেলার শিক্ষার্থী-কর্মচারীসহ সকল শ্রেণির মানুষ মহাসড়কে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিন চাকার এই যানটি দুর্ঘটনায় পতিত হলে বেঁচে থাকার ভরসা অনেকটা কমই।
জামালপুর জেলার নান্দিনায় বাড়ি ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন সরকারি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জুয়েলসহ একাধিক ছাত্র জানায়, ময়মনসিংহ শহরে বেসরকারি মেসে (ছাত্রাবাসে) উচ্চমূল্যে ভাড়া ও খাবার এবং অন্যান্য খরচ মিটিয়ে লেখাপড়া করা সকলের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তার মতো আরও অসংখ্য শিক্ষার্থীর একই অবস্থা। তাই স্বল্প ভাড়ায় চালিত বিআরটিসি বাস জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মোড় পর্যন্ত চলাচল করলে খুব সহজেই গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশুনা করতে পারতো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহের জনৈক শিক্ষক জানান, আমি জামালপুরে একটি কলেজে শিক্ষকতা করি। ট্রেনে সময়মতো কলেজে পৌঁছাতে পারি না, তাই বাধ্য হয়ে বেশি টাকা খরচ করে ঝুঁকি নেয় সিএনজি অটোরিকশায় চলাচল করতে হয়। বিআরটিসি বাস নিয়মিত চলাচল করলে আমরা সময় কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারতাম।
তিনি আরও বলেন, জামালপুর ও ময়মনসিংহ থেকে অসংখ্য কর্মজীবী আছেন যারা বিআরটিসি বাসের মতো নিরাপদ যানবাহন না পাওয়ায় তাদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। তাই নিরাপদ ও দক্ষ চালক সম্বলিত বিআরটিসি বাস চালু করা হলে আমরা অনেকটা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতাম।
অপরদিকে, আনন্দমোহন কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া নেত্রকোণার বারহাট্টার শিক্ষার্থী অজয় দাসসহ আরও অনেকে জানান, ময়মনসিংহ শহরের বেসরকারি ছাত্রাবাসে (মেসে) অবস্থান করে অতিরিক্ত খরচ যোগান দিয়ে তাদের মতো অসংখ্য শিক্ষার্থীর পড়াশুনা করা সম্ভব হচ্ছে না। আধুনিক রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন বিআরটিসি বাস নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মোড় পর্যন্ত চলাচল করলে খুব সহজেই গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশুনা করতে পারত।
সরকারি মুমিনুন্নিসা মহিলা কলেজের ছাত্রী নেত্রকোণার পূর্বধলার শারমিন আক্তার জানান, অনার্স কোর্সে নিয়মিত ক্লাস হয় না। তাই মেস ভাড়া করে নিয়মিত অবস্থান করে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব না। তাই স্বল্প ভাড়ায় বিআরটিসি বাস চালু হলে নিরাপদে কলেজে পড়াশুনা করার সুযোগ তৈরি হত।