নিজের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাই
তানভীর তারেক। নিজেকে সাংস্কৃতিককর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেই ভালোবাসেন। সংস্কৃতির একাধিক অঙ্গনে তার সরব পদচারণা। একাধারে সংগীত, সাহিত্য ও উপস্থাপনায় বিচরণ তার। সংগীত পরিচালক হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। একুশে বইমেলায় আসছে তার ১৫তম গ্রন্থ ‘শেষ ভ্রমণের আগে’। বিস্তারিত কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তারেক আনন্দ
সংস্কৃতির সব অঙ্গনে আপনার সরব উপস্থিতি। এবারের বইমেলায় আপনার কী বই আসছে?
এবার অন্যপ্রকাশের ব্যানারে আমার গল্পগ্রন্থ ‘শেষ ভ্রমণের আগে’ প্রকাশ পাবে। এটি আমার পনেরোতম গল্পগ্রন্থ। বইটির ভূমিকা লিখেছেন বরেণ্য কথাসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন। সেই হিসেবে রিটন ভাই আমার এই বইয়ের প্রথম পাঠক। তিনি তার পাঠপ্রতিক্রিয়ায় এমন কিছু কথা লিখেছেন, যা আমার জন্য সত্যিই অনুপ্রেরণার।
সব শাখায় আপনি কাজ করলেও মানুষ এখন আপনাকে বেশি চেনে উপস্থাপনার কারণে। কেমন লাগে ভাবতে?
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এটা আমিও অনুভব করি। কিন্তু নিজেকে তো অস্বীকার করতে পারি না। সবটাই তো আমি। তবে উপস্থাপনা বা অনুষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে আমি একেবারে নিজের মতো করে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্যই ‘কোলাহল’ নামে একটি হাউজ তৈরি করেছি। ইচ্ছে আছে এ বছর আমরা চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেব। আমার মতো করে নিজের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চাই। তা হতে পারে ছোট ছবি বা বড় ছবি। আমি উপস্থাপনা দারুণ উপভোগ করি।
সংগীতে আপনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক সম্মাননা। সংগীতের বর্তমান সময়টাকে কীভাবে দেখছেন?
মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি তার নিজের জায়গাতেই আছে। কিন্তু রয়্যালিটি প্রথা আজ অবধি চালু হলো না বলে এই সংকট। গান তার স্ব স্ব জায়গায় রেভিনিউ ঠিকই জেনারেট করছে। এখন যার হাতে টাকাটা যাচ্ছে, যে চুপ করে নিজের মনে করে বসে আছে। অন্যের হক মেরে দেওয়ার এই সহজ সমীকরণে সে লাভবান। কারণ সিস্টেম তো তৈরি হয়নি। সো সে কাকে কীভাবে দেবে। এ দেশে সিস্টেম গড়েও অনেক কিছু হয় না। আর সেখানে মানুষ বিবেকের দায়ে, নৈতিকতায় কাজ করবে, সে প্রত্যাশা করাটা তো খুবই বোকামি। গানের শক্তি অনেক। একটা বই বা সিনেমা একবারের বেশি দেখে বা পড়ে না। গান কেউ লক্ষবারও শুনেছে একজীবনে। এর শক্তি বিস্তৃতি বিশাল।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
আপনার কম্পোজিশনে নতুন কী কী কাজ আসছে?
বেশ কিছু কাজ আসবে। আমার সুর ও সংগীতে প্রয়াত কিংবদন্তি সুবীর নন্দীর গাওয়া দুটি গান রিলিজ দেব। মৃত্যুর আগে সুবীর দার সর্বশেষ অ্যালবামের কাজ আমিই করেছিলাম। ৯টি আনরিলিজ গান আমার কাছে। এ ছাড়া রবি চৌধুরীর দুটি গান বাঁধছি। তারান্নুমের কণ্ঠে আমার কথা ও সুর-সংগীতে আসবে একটি গান, গজল শিল্পী মেসবাহ আহমেদের কণ্ঠে আসবে একটি গান। অনেকদিন পর আমার সুরে এস আই টুটুলের গান বাঁধছি। সেটিও রিলিজ দেব এ বছর। এ ছাড়া আমার কণ্ঠে কিছু গানের কাজ শেষ, সেগুলোও রিলিজ দেব।
বরেণ্য অভিনেতা-নির্মাতা আফজাল হোসেনের পরিচালনায় ‘মানিকের লাল কাঁকড়া’ ছবিতে অভিনয় করলেন। অভিনেতার খাতায়ও নাম লেখালেন। আগামীতে অভিনয়ে নিয়মিত পাওয়া যাবে?
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা
এটা কাকতাল, একই সঙ্গে সৌভাগ্যও বলতে পারেন। আফজাল ভাইয়ের ছবিতে আমি সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি। তার মতো বরেণ্য মানুষের প্রথম চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসেবে আমাকে কাজের সুযোগ দিয়েছেন, এটিই আমার জন্য বিরাট প্রাপ্তি। আর অভিনয়টা একেবারেই আফজাল ভাইয়ের আদেশক্রমে করা। এই গুণটি আমার নেই। অভিনয় অনেক কঠিন একটি আর্ট। আমি ছবিতে বেশ কটি সিকোয়েন্সে কাজ করেছি। চিত্রনায়ক ফেরদৌস, সোহানা সাবাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছি। আফজাল ভাই যেভাবে যা করতে বলেছি, তাই করেছি। কেমন অভিনয় করেছি তা দর্শকরা বলতে পারবেন। তবে আফজাল ভাই ‘অ্যাকশন’ বলা মাত্রই আমার গলা শুকিয়ে আসছিল, হাত-পা অবশ হয়ে পড়ছিল। অভিনয় খুবই কঠিন একটি কাজ! আমাকে দিয়ে আর হবে না হয়তো।