প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের ২৬৪ জন বাংলাদেশে, ৬৫ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক

টেকনাফ প্রতিনিধি
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:১১
শেয়ার :
প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের ২৬৪ জন বাংলাদেশে, ৬৫ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় জান্তা বাহিনীর সঙ্গে জাতিগত বিদ্রোহীদের চলমান সংঘর্ষে জীবন বাঁচাতে এখন পর্যন্ত ২৬৪ জন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য, সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নতুন করে আরও ৩৬ জন যোগ হয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে।

দেশটিতে সংঘাত চলাকালে আজ নতুন করে ৬৫ জন রোহিঙ্গা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। টেকনাফে বিজিবি তাদের প্রতিহত করে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।

আজ বিকেল ৪টায় বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা ও শুল্ক কর্মকর্তাসহ আজ বিকেলে আরও ৩৬ জন পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে ২৬৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিজিবি জানিয়েছে, আজ সকালে উখিয়ার থাইংখালী রহমতের বিলে দুই নারীসহ ১১৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য ৯ জন। এ ছাড়া দেশটির সেনাসদস্য, শুল্ক কর্মকর্তা ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন। বিজিবি হেফাজতে তাদের সবার পরিচয় নেওয়ার হচ্ছে। অপরদিকে টেকনাফে উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে ঢুকে আরও ২ জন বিজিপি সদস্য আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকেও বিজিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত অনেক তীব্রতর হয়ে উঠেছে। বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা। এ পরিস্থিতিতে আজ সকালে রহমত বিল সীমান্ত দিয়ে একে একে অনেক বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। সীমান্ত এলাকা থেকে অনেক লোকজন অন্যত্র চলে যাচ্ছে এবং অনেক চাষিরা নিজেদের ক্ষেত ও মাছের প্রজেক্টে যেতে পারছে না। সীমান্তের লোকজন খুব আতঙ্কে আছে। পরিস্থিতির থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।’

এদিকে, আজ সকালে মিয়ানমারের মর্টারশেল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়ির উঠানের আমগাছে লেগে মাটির নিচে ঢুকে যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও বসতঘরের কাচের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এমকেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘ আজ ভোর থেকে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ঢেকোবুনিয়া এলাকার মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি-২ নম্বর ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প এলাকায় তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তুমব্রুর আশেপাশের এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং দোকানপাটও বন্ধ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কোন লোকজন যাতে একত্রিত না হয়ে আলাদা আলাদা চলাফেরা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’