মাদ্রাসা সভাপতিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার
পাবনার চাটমোহরে মাদ্রাসার কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের মারধরে মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল আলীম সরকার (৫২) নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বড় গুয়াখড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুল আলীম মা মালেকা ইছাহাক দারুল আকরাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি ও গ্রামের মৃত ইছাহাক সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা-ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- গ্রামের মৃত আরজান সরদারের ছেলে আফসার আলী মাস্টার (৬৫) ও তার ছেলে টেঙ্গরজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান ওরফে খোকন মাস্টার (৪০)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মা মালেকা ইছাহাক দারুল আকরাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসার অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ইসলামি জালসার আয়োজন নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভা শেষে মহেলা বাজারে চা খেতে যান আবদুল আলীম সরকার। সেখানে চা পান শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে বড় গুয়াখড়া গ্রামের মাজার শরীফ গেটের সামনে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত আফসার আলী মাস্টার, তার ছেলে কামরুল হাসান ওরফে খোকন মাস্টার ও তাদের সহযোগীরা আলীমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে খোকন মাস্টার উত্তেজিত হয়ে আলীমকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে দেয়। এ সময় অভিযুক্তরা আলীমকে কিল ঘুষি মারতে থাকেন। তাদের মারধরের একপর্যায়ে আলীম সরকার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় আশপাশের লোকজন ও আলীম সরকারের ছেলে আশিকুর রহমান আশিক ঘটনাস্থলে এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। পরে অজ্ঞান অবস্থায় আলীম সরকারকে উদ্ধার করে দ্রুত চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার আলী বলেন, মাজার শরীফের কমিটি গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তারই জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
চাটমোহর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বিধি মোতাবেক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের ভাই গোলজার হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আফসার আলী মাস্টার ও তার ছেলে কামরুল হাসান ওরফে খোকন মাস্টারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আফসার আলী মাস্টার ও কামরুল হাসান খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।