বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত নতুন গ্রাফিক নভেলের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫৪
শেয়ার :
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত নতুন গ্রাফিক নভেলের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ গ্রন্থ অবলম্বনে প্রকাশিত নতুন গ্রাফিক নভেলের মোড়ক উন্মোচন করলেন তার জ্যেষ্ঠ কন্যা, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলা-২০২৪-এর উদ্বোধন শেষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) স্টলে এসে তিনি এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। সেই সঙ্গে সিআরআই স্টল থেকে বইটির একটি কপিও কিনে নেন তিনি।

আজ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ফিতা কেটে মেলায় প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলা একাডেমির স্টল পরিদর্শন শেষে প্রাঙ্গণে প্রদর্শনী করা ছবিগুলো ঘুরে দেখেন তিনি। এরপর বিভিন্ন স্টল ঘুরে তিনি প্রবেশ করেন সিআরআই-এর স্টলে।

স্টলে থাকা সকলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় করিয়ে দেন সিআরআই ট্রাস্টি নসরুল হামিদ। এরপর এবারের মেলায় সিআরআই-এর মূল আকর্ষণ গ্রাফিক নভেল ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইটির মোড়র উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বইটি হাতে নিয়ে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এরপর আরও বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখে বই মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বরাবরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রয়েছে সিআরআই স্টল। এবার সিআরআই-এর স্টলের মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে নতুন প্রকাশিত গ্রাফিক নভেল ‘আমার দেখা নয়া চীন’।

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গ্রাফিক নভেল ‘‘মুজিব’’ ছিল আমাদের এই ঘরনার প্রথম কাজ। মূলত গ্রাফিক নভেলপ্রেমীদের জন্য এবং বঙ্গবন্ধুকে শিশু-কিশোরদের বোঝার মতো করে উপস্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে গ্রাফিক নভেল ‘‘মুজিব’’ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশের পর দারুণ সাড়া মেলে গ্রাফিক নভেল ‘‘মুজিব’’ নিয়ে। ১০ খণ্ডে এই গ্রাফিক নভেল প্রকাশের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা অপর এক জনপ্রিয় বইকেও পাঠকদের জন্য গ্রাফিক নভেল আকারে উপস্থাপনের পরিকল্পনা করি আমরা।’

 জানা যায়, ‘আমার দেখা নয়া চীন’ গ্রাফিক নভেলের প্রকাশক হিসেবে রয়েছেন সিআরআই ট্রাস্টি ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। গ্রাফিক নভেল চিত্রায়ন করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। এর কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপে কাজ করেছেন সিদ্দিক আহমেদ এবং প্রজেক্ট কিউরেশন ও সম্পাদনায় ছিলেন শিবু কুমার শীল।

বইয়ের প্রচ্ছদে ‘শেখ মুজিবুর রহমান: আমার দেখা নয়া চীন’ শিরোনামে যুবক বঙ্গবন্ধুকে দেখা যায় কোর্ট টাই পরা অবস্থায় তার চির পরিচিত চশমা চোখে। আর তার পেছনে চীনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ছবি। এই বইয়ে থাকছে ১৯৫২ সালে শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করা তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা যা নিজের নোট খাতায় টুকে নিলেও তখনই পুরোপুরি লিখে উঠতে পারেননি তিনি। এ বিষয়ে লেখার অবসর মেলে ১৯৫৪ সালে, কারাগারে বসে। প্রায় ৬৫ বছর পর ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় বাংলা একাডেমি থেকে বই আকারে প্রকাশিত হয় এ ভ্রমণকাহিনী।

এই গ্রাফিক নভেলের বর্ণনায় বলা হয়, দীর্ঘ ২৫ দিনের চীন ভ্রমণকে শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একটি ভ্রমণ হিসেবে নেননি, নিয়েছিলেন রাজনৈতিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে। সদ্য বিপ্লবের পর চীনদেশের রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা ও মানুষের জীবনযাত্রার কী পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তা বুঝতে ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজে লাগিয়েছেন। গ্রাম, শহর, কৃষিখামার, হাসপাতাল, কলকারখানা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রমজীবী মানুষের বাসস্থান তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন।

বিপ্লবের মাত্র তিন বছরের মাথায় চীনের যে অকল্পনীয় পরিবর্তন হয়েছিল তা তরুণ শেখ মুজিবকে অভিভূত করেছে। তাকে মুগ্ধ করেছে নয়াচীন সরকারের অকপটতা, সত্যবাদিতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। পিকিং, নানকিং, সাংহাই, ক্যান্টন, হ্যাংচোসহ চীনের বড় বড় শহর তিনি ট্রেনযোগে সফর করেছেন। সাক্ষাৎ পেয়েছেন মহান নেতা মাও সে তুংয়ের। মাওয়ের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা তরুণ শেখ মুজিবকে অনুপ্রাণিত করেছে।

 ভোরের সূর্য দেখে যেমন সারাদিনের উত্তাপ অনুমান করা যায়, ঠিক তেমনি এই গ্রন্থের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে থাকা রাজনৈতিক অন্তর্দৃষ্টিও আভাস দেয় যে একদিন এই তরুণের হাতেই বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভার অর্পিত হবে। এই শেখ মুজিবুর রহমানই একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠবেন। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রস্তুতিকালকে বুঝতে এ গ্রন্থ সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। বইটি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্থাপিত সিআরআই-এর ৮৭৮-৯৭৯ নম্বর স্টলে মিলবে।