গণঅধিকার পরিষদের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ
সংসদ অভিমুখে গণঅধিকার পরিষদের (নূর-রাশেদ) কালো পতাকা মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুনসহ অন্তত দশ নেতা আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিজয়নগর আল রাজি ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করলে পুলিশ মারমুখী অবস্থান নেয়। মিছিল শুরু হলে পুলিশ ব্যানার কেড়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়।
পুলিশের বাধা পরবর্তী সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি, কিন্তু পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে হামলা করছে। আজকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ হামলা করেছে, অসংখ্য নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আমরা চাইলে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে মিছিল করতে পারি। এতে আমাদের হয়তো কয়েকজনকে আটক করবে। কিন্তু এতে লাভ কার? ২৮ অক্টোবর একজন পুলিশ মারা গেলে, এতিম হলো তার সন্তান, বিধবা হলো তার স্ত্রী, লাভ হলো সরকারের। আজকে একটা অবৈধ সংসদের অধিবেশন বসেছে। এই সংসদে কেউ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। এরা অবৈধভাবে সংসদে বসেছে। আজকে এই সরকার দৈত্য দানবের মত জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আজকে ড.ইউনুসের মত সম্মানী লোককে কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর হামলা করছে,তাদের কিন্তু বিচার হবে। আমরা মরে গেলেও আমাদের সন্তানরা বেঁচে থাকবে, আমাদের নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকবে,তারা একদিন বিচার করবে। অনেকেই নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলন করছেন আলাদা আলাদা ভাবে, তাদের বলব একসঙ্গে নামুন। আলাদাভাবে নেমে সরকার পতন করা যাবে না। আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বলতে চাই, ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। ৭১-এর পর বাকশাল কায়েম করেছিলেন, জনগণ মেনে নেয়নি। এবারও জনগণ মেনে নেয়নি। তারা সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় আছে। প্রেক্ষাপট তৈরি হলে, জনগণ রাজপথে নেমে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগকে গদি থেকে নামাবে।’
দলের সাধারণ সম্পাদক মো রাশেদ খান বলেন, ‘সংসদ অভিমুখে আমাদের কালো পতাকা মিছিল ছিল। পুলিশ আমাদের মিছিল পণ্ড করে দিয়েছে। আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সেখানে পুলিশ উল্টো অবৈধ ক্ষমতা রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। আমাদের আন্দোলন তো পুলিশের বিরুদ্ধে না। আজকে অবৈধ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছে, আমরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনেই প্রতিবাদ করছি। কিন্তু এই অবৈধ সরকার কোনো রীতিনীতির ধার ধারে না। এই সরকারের কাছে ক্ষমতায় মুখ্য বিষয়। কিন্তু আইয়ূব-ইয়াহিয়া কেউই ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। এই ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আজকে আমরা রক্তাক্ত হয়েও রাজপথ ছেড়ে দেয়নি, রক্তাক্ত হয়েও প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছি।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
রাশেদ খান আরও বলেন, ‘আজ উত্তরার প্রোগ্রাম থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানকে আটক করার পর ছেড়ে দিয়েছে, কয়েকজন মহিলা নেত্রীকে আটক করে নিয়ে গেছে। গ্রেপ্তার যদি হতেই হয়, আমাদের রাজপথ থেকেই গ্রেপ্তার হতে হবে। জনগণকে বলব, রাজপথে নেমে আসুন, সরকারের পতন অনিবার্য।’
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, ফাতিমা তাসনিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি ডা. জাফর মাহমুদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদসহ নেতাকর্মীরা।