শেখ হাসিনা ৭ ভাগ মানুষের প্রধানমন্ত্রী: গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ জানুয়ারী ২০২৪, ১৩:৪১
শেয়ার :
শেখ হাসিনা ৭ ভাগ মানুষের প্রধানমন্ত্রী: গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনী ফলাফল হচ্ছে দুটি। এর একটি শেখ হাসিনা ৭ ভাগ মানুষের প্রধানমন্ত্রী। আর বিরোধী দল নাই, যেটার নাম ঘোষণা করা হয়েছে ‘গৃহপালিত’ বলা হলেও সেটা তৃতীয় লিঙ্গ। এটার কোন রাজনৈতিক পরিচয় বা বৈশিষ্ট্য নাই।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবৈধ সংসদ বাতিলসহ ১ দফা দাবী আদায়ে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে দেশে দ্রব্যমূল্যের কি অবস্থা? জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু সরকার চায় কেবলমাত্র ক্ষমতা। টাকা পাচার বেড়েছে। তাহলে এসবের জবাব দিবে কে?’

তিনি বলেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি দেশের ৭ শতাংশ লোক সরকারকে নাকি ভোট দিয়েছে। তাহলে দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে চাননা। তাছাড়া ওই ৭ শতাংশ লোক হলো সরকারের সুবিধা ভোগী। যাদেরকে কার্ড দিয়ে আবার তা জব্দ রেখেছে। এটাতো সমকামী নির্বাচন। শেখ হাসিনা ৭ পার্সেন্ট লোকের প্রধানমন্ত্রী আর তারেক রহমান ৯৩ শতাংশ মানুষের নেতা। এটা প্রমাণিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ তো এই সরকারের বিরুদ্ধে লাল পতাকা ও কালো পতাকা প্রদর্শন করছে। তারা কিন্তু এই সরকারের পক্ষে কিছু বলছে না। সুতরাং লাজ-লজ্জা-ভয় এই তিনটি যাদের নাই তারাই সংসদে বসতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে উন্নয়নের অপর নাম দুর্নীতি। তারা উন্নয়ন না করে বিদেশে টাকা পাচার করে। দেশে কোনো কর্মসংস্থান নেই। বেকারত্ব বাড়ছে। এভাবে বেকারত্ব বাড়লে তরুণদের ক্ষুধাও কিন্তু বাড়ে। এই সরকারকে সরাতে আমাদের লড়াই চলছে এবং চলবে। হয়তো কৌশল ভিন্ন হয়। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছে এবং করবে। আমরা তো ১৭৩ দিন হরতাল এবং বাসে গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা, লগি বৈঠা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে নাচগান করার রেকর্ড করতে পারিনি। এই ঐতিহ্য তো তাদের মানায় যাদের ডান হাত আর বাম হাত একই।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শুধু একা নয়, কিছু দেশ, প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে একটা সিন্ডিকেট দেশের ১৮ কোটি মানুষের ক্ষমতা হরণ করেছে। এই সরকারকে বলা যায় কর্তৃত্ববাদী। এই সরকারের ভাষা কখনো জনগণের জন্য হয়না। তাদের মায়া-মমতা থাকেনা। তাদের লক্ষ্য থাকে দেশের অর্থনীতি লুটপাট করা। তাদের সঙ্গে পার্টনার থাকে পুলিশ প্রশাসন। আজকে সরকার তার প্রশাসনের লোকজনেরও দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে। এমন অবস্থা হয়েছে যে, তারা কেউ দুর্নীতি না করলেও চাকরি যায়।’

তিনি বলেন, ‘আজকে টাকার ও ক্ষমতার লোভে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে জামিন দেননি। তারা নাকি প্রাধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। তাহলে একই ঘটনার মামলায় মেজর শাহজাহান ওমর জামিন পেয়ে নৌকার এমপি হলেন কীভাবে? তাহলে তো বোঝা যায় যে এটা সাজানো ও পরিকল্পিত ঘটনা। এখানেই বোঝা যায় এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এরা ভারত, চীন ও রাশিয়ার সরকার। চীন ও রাশিয়ায় তো নির্বাচন হয়না।’

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, প্রকৌশলীদের সংগঠন এ্যাবের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ডিইউজের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকা প্রমুখ। মানববন্ধনে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, সাঈদ খান, তরিকুল ইসলাম তারিক প্রমুখ