এই সরকার ভারত, চীন আর রাশিয়ার, জনগণের নয়: গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ জানুয়ারী ২০২৪, ২১:২০
শেয়ার :
এই সরকার ভারত, চীন আর রাশিয়ার, জনগণের নয়: গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার। তাই এই সরকারকে মানতে বাধ্য নই।’

আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় আগামী ৩০ জানুয়ারি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কারবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি, দ্বাদশ সংসদকে ‘অবৈধ’ দাবি করে তা বাতিল ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সারাদেশে একযোগে কালো পতাকা মিছিলের ঘোষণা দেন তিনি। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘৭ জানুয়ারি মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায় নাই। ৭ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের ৭ ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আর তারেক রহমান ৯৩ শতাংশ মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুতরাং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতেই হবে। এই সরকারকে আমরা মানতে বাধ্য নই। এটা আমাদের ভোটের লড়াই, গণতন্ত্রের লড়াই এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই। সুতরাং প্রতিরোধের আগেই কেটে পড়ুন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই। আজকে জিনিসপত্রের দাম অতিমাত্রায় বৃদ্ধি। দেশের মানুষ দিশেহারা। ঘরে ঘরে অভাব। দিনমজুর মানুষ আগের মতো পেট ভরে দুবেলা খেতে পারে না। দেশটাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। আর তারা নাকি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন করেছে।'

তিনি বলেন, ‘আসলে এই ধারাবাহিকতা তাদের লুটপাট ও মহাদুর্নীতির কারণে। দশ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। যারা পাচার করেছেন তারা কিন্তু অস্বীকারও করে না। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।’ 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সেদিন একজন বিজিবি সদস্যকে হত্যা করেছে। কেন, কীসের অধিকারে তারা এটা করছে? কেন একটা প্রতিবাদ নেই? আজকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন। কারণ অন্য কেউ যখন দেশের সিদ্ধান্ত নেয় তখন তো আমার সার্বভৌমত্ব থাকে না।’তিনি বলেন, ‘আজকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলেন! আর যেদিন সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে দেশ ছাড়া করলেন, তখন কী হয়েছিল? তাহলে প্রধান বিচারপতির পদটা কতটা কলঙ্কিত করলেন?’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগ ঘটাতে রাজপথে নেমেছি। সরকার কালো পতাকার কালো চিহ্নে নিশ্চিহ্ন হয়ে বিদায় নিতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল কারও কাছে মাথা নত করতে নয়। দিল্লির শাসন দিয়ে কোনোদিন বাংলাদেশ চলেনি, আজকেও দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগ ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়ায় দেশ শাসন করছে। তারা দেশে বিভাজন তৈরি করেছে।’ 

বিএনপির ঘোষিত কালো পতাকা মিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, মালিবাগ পার হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনের অনুরোধে সেটা পরিবর্তন করা হয়। সমাবেশ শেষে নয়াপল্টন থেকে মিছিল শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে নটরডেম কলেজের সামনে দিয়ে আরামবাগ মোড় হয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে এসে কর্মসূচির সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। 

এ সময়ে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ। 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও দলটির নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, কাদের গণি চৌধুরী, রফিক শিকদার, ঢাকা জেলা বিএনপির খন্দকার আবু আশফাক, নিপুন রায় চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, ইয়াসিন আলী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের

রাকিবুল ইসলাম, আবু সালেহ মোহাম্মদ আদনান, পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে প্রকৌশলী মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নুসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, জাসাসের হাজারো নেতাকর্মী কালো পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।