ধান মজুদ করায় চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতিকে জরিমানা, গুদাম সিলগালা
অবৈধভাবে ধান মজুত করায় নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি ও নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন ধানসহ তার তিনটি গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেলে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট এস এম রবিন শীষ এবং নেজারতে ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইফতেখারুল ইসলাম শামিমের নেতৃত্বে গঠিত দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত চালকলগুলোতে অভিযান চালান।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা জানান, অবৈধ মজুদবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। শনিবার বিকেলে শহরের আনন্দ নগর এলাকায় মেসার্স আর এম রাইস মিলে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওই মিলের তিনটি গুদামে অবৈধভাবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন ধান পাওয়া যায়। পরে কৃষি বিপণন আইনে মিলের স্বত্ত্বাধিকারী নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি ও নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে গুদামগুলো সিলগালা করা হয়। বাজার দর অনুযায়ী ধান বিক্রির শর্তসাপেক্ষ গুদামগুলো খুলে দেওয়া হবে জানান তিনি।
অন্যদিকে, শহরের বাইপাস এলাকায় তছিরন অটো রাইসমিলে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ধান মজুদের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় ওই মিল মালিক আনিসুর রহমানের ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া, বাইপাস এলাকার জায়দা রাইস মিলের অভিযান চালিয়ে অবৈধ ধানের মজুদ পাওয়ায় মিল মালিক গোলাম কিবরিয়ার ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শহরের মাদার মোল্লা এলাকায় মফিজ উদ্দিন অটো রাইস মিলে অভিযান চালানো হলে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পরে। অনুমোদনের চেয়ে বেশি সময় ধরে ধান-চাল মজুদ করায় ওই মিলের মালিক তৌফিকুল ইসলাম বাবুর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া বাজারে এলাকায় এম এম অটোমেটিক রাইস মিলের ধান চাল অবৈধ মজুদ পাওয়ায় মিল মালিক মোতাহার হোসেন পলাশের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নওগাঁ শহরের সুলতানপুর মহল্লার সুফিয়া অটোমেটিক রাইস মিলে অভিযান চালিয়ে ধান ও চালের অবৈধ মজুদ পাওয়ায় মিল মালিক শফিকুল ইসলাম নাথুর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া, জেলার মান্দা উপজেলার মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট লায়লা আঞ্জুমান বানু সবাইহাটে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ধান মজুদের দায়ে এবং লাইসেন্স না থাকার জন্য ফয়জুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়া সুমন কুমার নামের এক ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মহাদেবপুর উপজেলার নাহার আরমান অটোমেটিক রাইস মিলে ধান ১ মাসের বেশি সংরক্ষণ করায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, শাপলা অটোমেটিক রাইস মিলে চাল ১৫ দিনের বেশি সংরক্ষণ করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা, দাদা অটোমেটিক রাইস মিলে চাল ১৫ দিনের বেশি চাল সংরক্ষণ করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া, জাহিদ অটোমেটিক রাইস মিল ও মক্কা মদিনা অটোমেটিক রাইস মিলে অভিযান চালানো হয় কিন্তু ধান চালের কোন মজুদ না পাওয়ায় এই দুটি মিলের কোনো জরিমানা করা হয়নি।
আজ জেলায় মোট ১৩টি মিলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ৩টি গুদাম সিলগালা করা হয়েছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, অবৈধ মজুদ বিরোধী চলমান অভিযানের ফলে চালের বাজার দর কমতে শুরু করেছে। এই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।