নোয়াখালীতে ২৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত

নোয়াখালী প্রতিনিধি
১০ জানুয়ারী ২০২৪, ১১:১২
শেয়ার :
নোয়াখালীতে ২৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর ছয়টি আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় ২৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষরিত ফলাফল শিট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ফলাফল শিট থেকে দেখা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ছয়টি আসনে এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ৩২ জন। এদের মধ্যে নোয়াখালী-১ আসনে সাতজন, নোয়াখালী-২ আসনে সাতজন, নোয়াখালী-৩ আসনে ছয়জন, নোয়াখালী-৪ আসনে চারজন, নোয়াখালী-৫ আসনে পাঁচজন এবং নোয়াখালী-৬ আসনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। 

নোয়াখালী-১ আসনে প্রার্থী ছিলেন সাতজন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ছয়জন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৮৯ হাজার ৩২৫ জন। নির্বাচনে ১২৯ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে এক লাখ ৭১ হাজার ২১০টি। এর মধ্যে এক লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ ভোট পেয়ে তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী এইচএম ইব্রাহীম। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তরিকত ফেডারেশনের একেএম সেলিম ভূঁইয়া ফুলের মালা প্রতীকে দুই হাজার ৮১৯ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারানো অন্যরা হলেন- বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক ডাব প্রতীকে দুই হাজার ৩৩৩, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের শাহ আলম চেয়ার প্রতীকে দুই হাজার ৯১, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মমিনুল ইসলাম মোমবাতি প্রতীকে এক হাজার ৮৮৯, জাসদের হারুন অর রশিদ মশাল প্রতীকে এক হাজার ৮১০ ও গণফ্রন্টের খোরশেদ আলম মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৯৭৭ ভোট পেয়েছেন।

নোয়াখালী-২ আসনে প্রার্থী ছিলেন সাতজন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন পাঁচজন। এই আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৬০ হাজার ৪৬৪ জন। নির্বাচনে ১২৮ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে এক লাখ ১০ হাজার ৭০৩টি। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী আরটিভি ও বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামান লাঙ্গল প্রতীকে ৭৫২ ভোট, কল্যাণ পার্টির কাজী সরওয়ার হাতঘড়ি প্রতীকে ১৬১ ভোট, জাসদের নইমুল আহসান মশাল প্রতীকে ৩৬৫ ভোট, বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ টেলিভিশন প্রতীকে ২১৭ ভোট ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রবিউল হোসাইন ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৯ ভোট।

নোয়াখালী-৩ আসনে প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন চারজন। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭৩ হাজার সাতজন। নির্বাচনে ১৪৯ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে এক লাখ ৯ হাজার ৪৬৭টি। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৪৩৭ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি  মিনহাজ আহমেদ জাবেদ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৫১ হাজার ৮৮৫ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে সাম্যবাদী দলের মহিউদ্দিন চাকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৩২ ভোট, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ লাঙ্গল প্রতীকে ৩৪৮ ভোট, জাসদের জয়নাল আবেদীন মশাল প্রতীকে ১৪৭ ভোট ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ১১৮ ভোট।

নোয়াখালী-৪ আসনে প্রার্থী ছিলেন চারজন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন দুজন। এ আসনে মোট ভোটার ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৭৯৯ জন। নির্বাচনে ১৯৬ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে এক লাখ ৭৮ হাজার ২২২টি। এর মধ্যে এক লাখ ২৮ হাজার ৭৬৪ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৫৭৩ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবদুল আলীম চেয়ার প্রতীকে ৯৬২ ভোট ও জাতীয় পার্টির মোবারক হোসেন আজাদ লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৯২৩ ভোট।

নোয়াখালী-৫ আসনে প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন চারজন। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ চার হাজার ৯৭৭ জন। নির্বাচনে ১৩২ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে এক লাখ ৯৬ হাজার ৭৪০টি। এর মধ্যে এক লাখ ৮১ হাজার ২৮১ ভোট পেয়ে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির খাজা তানভীর আহমেদ লাঙ্গল প্রতীকে ৯ হাজার ৭০২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এছাড়া জাসদের মকছুদের রহমান মানিক মশাল প্রতীকে দুই হাজার ১৩২ ভোট, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শাকিল মাহমুদ চৌধুরী ছড়ি প্রতীকে দুই হাজার ১৩২ ভোট ও ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের শামছুদ্দোহা চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৪৯৩ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছে।

নোয়াখালী-৬ আসনে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন দুই জন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৫ হাজার ১৩২ জন। নির্বাচনে ৯৬ কেন্দ্রে সর্বমোট বৈধ ভোট পড়ে দুই লাখ চার হাজার ৩৮৬টি। এর মধ্যে এক লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মুশফিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে পাঁচ হাজার ৯৩৬ ভোট ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মোজাম্মেল হক ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ৭৩৫ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।