মরদেহের দাবিতে মর্গে যাদের পরিবার

ঢামেক প্রতিবেদক
০৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৬:২০
শেয়ার :
মরদেহের দাবিতে মর্গে যাদের পরিবার

রাজধানীর গোপীবাগে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’-এ আগুন লেগে চারজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মরদেহগুলো এতটাই পুড়েছে, যা দেখে কেউ শনাক্ত করতে পারছেন না।  

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটিতে থাকা বেশ কয়েকজনকে খুঁজে পাচ্ছে না তাদের পরিবার। মর্গে থাকা মরদেহ নিজের পরিবারের সদস্যের, এমনই আশা করে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই।

তবে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের পর ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের নমুনা সংগ্রহ করে দাবিদারের সঙ্গে ডিএনএ’র মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।

আবু তালহা (২৪) নামের এক যুবককে খুঁজে পাচ্ছে না তার পরিবার। তিনি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার গাংবথনদিয়ার আব্দুল হকের ছেলে। তারা  ফরিদপুর রেল স্টেশনের পাশে থাকতেন। তালহা বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিএইউএসটি), সৈয়দপুরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন।  ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’-এ চড়ে তিনি ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার কথা ছিল তার। ঢামেকে তালহার মরদেহ শনাক্তের জন্য এসেছেন তার বাবা।

একই জেলার সদর উপজেলার চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমিকেও (২৮) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাজবাড়ী সদর উপজেলার রঘুনাথপুরের চিত্তরঞ্জন চৌধুরী ও ইতি রানীর মেয়ে তিনি। রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের (৪৮/এম/১) বাতেন সাহেবের বাসায় ভাই-ভাবির সঙ্গে তিনি সৌমি। তার মরদেহের দাবিদার ভাই ডা. দিবাকর চৌধুরী।

‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’-এর যাত্রী রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দার ৭৬ শরৎ গুপ্ত রোডের বাসিন্দা নাতাশা জেসমিন নেকি (২৫) নিখোঁজ রয়েছেন। তার স্বামী আসিফ খান (৩০) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটে ভর্তি আছেন। নেকির মরদেহের দাবি নিয়ে ঢামেকে এসেছেন তার ভাই খুরশিদ আহামেদ।

 ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেতাফুর রহমান বলেন, ‘মরদেহের শরীর এতটাই পুড়ে গেছে, যা দেখে চেনার কোনো উপায় নাই। এখন ময়নাতদন্তের সময়ে মরদেহ থেকে ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য বলা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগকে।’

তিনি বলেন, ‘পরে সিআইডির মাধ্যমে দাবিদারদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ম্যাচিং হওয়ার পর পরিচয় শনাক্ত করে, স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখন পর্যন্ত চারজনের দাবিদার আসলেও তিন জন লিখিত আবেদন করেছেন। এদের মধ্যে একজন পুরুষ দুইজন নারী। আবেদন ছাড়া একজন আসছিলেন সেটি নারী।’

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ কাঁচাবাজারের সামনে এলে হঠাৎ বগির মধ্যে আগুন দেখতে পান ট্রেনের যাত্রীরা। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসছিল। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই শিশু ও এক নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।