‘পোড়া লাশের গন্ধ মেখে গদির লড়াই আর কতকাল?’

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৪:৫৬
শেয়ার :
‘পোড়া লাশের গন্ধ মেখে গদির লড়াই আর কতকাল?’

ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। তারা বলেছেন, ‘পোড়া লাশের গন্ধ মেখে গদির লড়াই আর কতকাল চলবে? কতকাল সাধারণ মানুষ এই ধরনের নৃশংস ঘটনার বলি হবে। জনমনে প্রশ্ন ক্ষমতার রাজনীতির এই বলি বন্ধ হবে কবে? শাসকগোষ্টির ক্ষমতার লড়াই তবু নীরিহ মানুষকে মরতে হয় কেন?’ 

আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এই ধরনের হিংস্র ও নিষ্ঠুর ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আগুন লাগিয়ে হতাহতের ঘটনা নিঃসন্দেহে মানবাধিকার, মানবতার পরিপন্থি এক হিংস্র নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। 

তারা বলেন, মর্মান্তিক এ ঘটনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার না করে সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। সব কিছু রাজনৈতিক বিবেচনায় না করে, দায় এড়ানোর জন্য একে অপরের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা না করে দেশ ও জাতির স্বার্থে সঠিক তদন্ত করাই এখন সময়ের দাবি।’ 

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার দায় সরকার বা বিরোধী দল কেউ এড়াতে পারে না। সাময়িক ব্যক্তিস্বার্থে দেশ ও জাতির বিশ্বাস ধ্বংস করে দিয়ে রাজনীতিবিদরা নিজেদের হাস্যকর বস্তুতে পরিণত করছেন। যার ফলে দেশের রাজনীতি আজ আমলা আর ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। যাল ফল কারও জন্যই শুভ হবে না, হতে পারে না।’

তারা বলেন, ‘দু:খজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৫২ বছরেও শাসকগোষ্টি ও রাজনীতিরা একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে ক্ষমতাসীনরা ও বিরোধীদের লড়াইয়ে বারবার বলির পাঠা হচ্ছে সাধারণ নিরীহ জনগণ। 

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভস্মীভূত মানুষগুলো রাজনীতি বোঝেনি, রাজনীতির কারণেই তাদেরকে বের হতে হয় নাই। বের হতে হয়েছে জীবন-জীবিকার তাগিদে। রাজনীতিবিদ ও এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নিজেদের বৌ, বাচ্চা, বাবা, মা, ভাই, বোনসহ দেশবাসীর কথা বিবেকের বিবেচনায় আনতে হবে। মনে রাখতে হবে, এদের কেউ হয়তো চিকিৎসা বা ভ্রমণ শেষে তারা নিজ ঘরে ফিরছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপন ঠিকানায় তাদের পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। অপেক্ষায় ছিলেন আপনজনেরা। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা ট্রেনের জানালা থেকে মুখ বের করে বাঁচার শেষ আকুতি মানুষটির। কোনো মায়ের কলিজার টুকরো সন্তান, কারও স্বামী, কারও পিতা হয়তো বা কারও বাবা।

তারা বলেন, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৭৯ সালে লিখেছিলেন, ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’। সে ছিল ভিন্ন সময়, ভিন্ন প্রেক্ষাপট। এখনো বাতাসে লাশের গন্ধ পাওয়া যায়, অন্য কোনো প্রেক্ষাপটে। তিনি লিখেছিলেন, ‘ঘুম আসে না’। এখনো স্বজনহারা অনেকেরই ঘুম আসে না।