দেশের উন্নয়নে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার তাগিদ বিশিষ্ট নাগরিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ জানুয়ারী ২০২৪, ২০:৫৯
শেয়ার :
দেশের উন্নয়নে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার তাগিদ বিশিষ্ট নাগরিকদের

বাংলাদেশে উন্নয়নের অগ্রগতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার স্থানীয় একটি হোটেলে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জন:প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য নাগরিকরা এ কথা বলেন। 

বিশিষ্ট নাগরিকরা এই নির্বাচনের ওপরে দেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রা নির্ভর করছে। সেইজন্য সকল বাধাবিপত্তি, বৈরিচাপ ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রতি নাগরিক সমাজ সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকারসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করাই হবে নতুন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তারা নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গৃহীত কার্যক্রম এবং শেখ হাসিনা সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের প্রশংসা করেন।

সভায় সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উত্তর দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা হবে নয়া সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। দুষ্টচক্র দমন করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উন্নয়ন-অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরনের নাশকতার আশঙ্কা ও ভয়ভীতিকে অতিক্রম করে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সম্মিলিতভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

সভায় ইউসিজির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর এম এ মান্নান বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা থেকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি সুশাসনের জন্য সঠিক মানুষকে সঠিক জায়গায় বসাতে হবে। এবারের নির্বাচনে কোনো যুদ্ধাপরাধী অংশ নিচ্ছে না, এটা জাতির জন্য স্বস্তিকর।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার আওয়ামী লীগের ইশতেহারে রয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার জনগণের নিকট দায়বদ্ধ থাকলে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে উন্নয়নের অভিযাত্রা এগিয়ে নেওয়া সরকারের জন্য সহজতর হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত বাংলাদেশ চায় এদেশের জনগণ। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর হত্যা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে বিভাজন ও অনাস্থা সৃষ্টি করেছে, সেটির সুযোগ নিচ্ছে বিদেশিরা। নির্বাচন প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেওয়া দলগুলো যাতে নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে না পারে সেদিকে সর্বাত্মক নজর রাখতে হবে।’

সাংস্কৃতিক কর্মী নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে এদেশের জনগণ অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে ক্ষমতা আনবে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘নতুন সরকার দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করবে বলে জনগণ বিশ্বাস করে।’

সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলতে যোগ্য লোককে যোগ্য স্থানে পদায়নে মনোযোগ বাড়াতে হবে।’

সাংবাদিক নঈম নিজাম বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি জনপ্রত্যাশা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতির ব্যাপকতা বাড়াতে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে কাজ করতে হব

সভায় বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী, বিশিষ্ট সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, অজয় দাশগুপ্ত, আশীষ সৈকত, ডা. নুজহাত চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হান্নান, কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম, সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সাধারণ সম্পাদক ম. হামিদ, প্রকৌশলী এ কে এম এ হামিদ, নেসার হোসেনসহ আরও অনেকে।