‘বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে’
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের চরিত্র দুর্বৃত্তায়িত হতে দেওয়া যাবে না। আমাদের আয় বৈষম্য বেড়েছে। আয় ও সম্পদ আহরণের বৈষম্য বেড়েছে। শিক্ষা, অর্থনীতি ও কর্মের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে হবে। সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইংরেজী দৈনিক ‘বিজনেস আই’ আয়োজিত ‘ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজনেস আই সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। বৈঠকে বক্তারা আরও বলেন, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও সমতা আনতে হবে। সুষম উন্নয়ন ও সুযোগ সৃষ্টির জন্য গ্রামে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে কৃষিখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কেননা বাংলাদেশ একটি গ্রাম প্রধান দেশ।
আরও পড়ুন:
সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে অনীহা ব্যাংকের
অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের অর্থনীতির বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি আমীন হেলালী, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. এম শামসুল আলম, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসুদ মান্নান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গ্লোবাল টিভির সিইও সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ বলেন, আমরা শুধু চাই আমাদের আরো সম্পদ বাড়বে, আমরা আরো ধনী হবো। এরকম চিন্তা থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের নীতি ঠিক থাকলেও ব্যক্তি পর্যায়ে এসে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম
কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষের উন্নয়নের জন্য যতগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন, সেখানে তিনি মানুষকে কেন্দ্র করে কৃষিতে নজর দিয়েছিলেন, শিক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুতে তিনি নজর দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর পরে এটা কিন্তু আর থাকলো না।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা মানুষ কেন্দ্রিকতা থেকে বের হয়ে পুঁজি কেন্দ্রিকতার দিকে চলে এসেছি। ২০০৯ সাল পর্যন্ত আমরা দারিদ্র্যতার মধ্যে জড়িয়ে ছিলাম। এরপর ২০১৫ সালে এসে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। তারপরে এ পর্যন্ত এসে দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন-তো হয়েছেই তার পাশাপাশি সামাজিক ক্ষেত্রেও হয়েছে। এখন শিশুর মৃত্যুর হার কমেছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। খর্বাকৃতির শিশুদের হার কমেছে, কম ওজনের শিশুদেরও হার কমেছে।
খলীকুজ্জমান বলেন, ২০১৯ সালে অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে আমরা এমন একটা শক্ত অবস্থানে ছিলাম, তারপর খুব দ্রুত এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সেই ঘোষণাই দেওয়া হয়েছিল। এখন নির্বাচনী ইশতেহারে যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও চিহ্নিত ছিল। করোনা এবং ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে এ সমস্যাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি। এখন আমাদের এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।