বিরোধীদের মোকাবিলায় কৌশলী ছিল আ.লীগ

মুহম্মদ আকবর
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
বিরোধীদের মোকাবিলায় কৌশলী ছিল আ.লীগ

বছরের শুরুতেই চ্যালেঞ্জে পড়ে আওয়ামী লীগ। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে বিএনপির লাগাতার আন্দোলন হয়। ওই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার পাশাপাশি বহির্বিশ্বের নানারকম চাপ সামলাতে হয় দলটিকে। গত বছর মে মাসে আমেরিকার স্যাংশন শব্দটি বারবার শুনতে হয় দেশের মানুষকে। এর সঙ্গে যোগ হয় কোভিড-উত্তর বিশ্বে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব। এর প্রভাবে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করাতেও বেগ পোহাতে হয় তাদের। ‘শান্তি সমাবেশ’-এর নামে বছরজুড়েই রাজপথে সরব থেকে বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের গুটিকয়েক বাম দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক চাপ মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হচ্ছে দলটিকে। এত কিছুর পরও দলটি মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তাক লাগানো উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে। মেগাপ্রকল্প পদ্ম সেতুর ওপর দিয়ে রেল চালু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল, থার্ড টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, কক্সবাজারে রেলসংযোগসহ বড় বড় প্রকল্পের কাজ শেষ করে তা উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের মানুষের মনে স্বস্তির বার্তা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বিদায়ী বছর ২০২৩ সালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই আওয়ামী লীগ ছিল নির্বাচনী মেজাজে। ভোটের মাঠে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে দলের তৃণমূলের দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসন, দলের অভ্যন্তরে ঐক্যের সৃষ্টি, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নির্ধারণসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়ে তৃণমূলে ছুটেছেন দলীয় প্রধানসহ শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনী জনসভা, কর্মিসভা, কর্মী-সমাবেশ, উঠানবৈঠক ও মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে দেশব্যাপী জনগণের সামনে তুলে ধরা হয়েছে সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি।

সারাবছরজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি থাকলেও আগুন ও জ্বালাও-পোড়াও চিত্র দেখেন দেশের মানুষ। এসব অপকর্মের জন্য বিএনপি-জামায়াত এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বছরের শেষ দিকে এসে নির্বাচনের প্রচারে সংঘাত-সহিংসতায় জড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রক্ত ঝরছে দলটিতে। প্রাণও গেছে দেশের কয়েক জায়গায়। এসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ও জনগণের মনে থাকা মিশ্রপ্রতিক্রিয়া ঘুরিয়ে দিতে শেষ সময়ে নির্বাচনী ইশতেহারে চমক দিতে চেয়েছে দলটি।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান এবার বাড়বে কর্মসংস্থান’ শীর্ষক ইশতেহারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মাদকমুক্ত দেশ গড়া, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও বাজার নিয়ন্ত্রণসহ ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে ইশতেহার দিয়েছে দলটি। নতুন বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সারা বিশ্বের নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সামনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ।