নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদেরও আগ্রহ নেই: রিজভী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বহু এলাকার প্রার্থীদের মধ্যেও আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শুক্রবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দলের ভোটবর্জন এবং ‘‘একমাত্র ভোটার’’ শেখ হাসিনার ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচনে কে জিতবে তার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। এটা জানার পর প্রার্থী নিজেও প্রচার থামিয়ে দিয়েছে। প্রচার চালানোর জন্য দলীয় সমর্থকদের যে হাতখরচ, প্রার্থী তাও বন্ধ করে দিয়েছে। প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের জন্য যে নির্বাচনী ক্যাম্প খোলা হয়েছিল, এখন তা জনমানবহীন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শুরুতে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট গণমাধ্যম নানা অ্যাঙ্গেলে প্রচার চালিয়ে নির্বাচন জমানোর চেষ্টা করেছিল। প্রার্থী ও তাদের সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের ভোট নিয়ে আগ্রহ না থাকায় গণমাধ্যমের আগ্রহেও ভাটা পড়েছে। কিন্তু নানা চাপের কারণে তারাও প্রচার চালাতে বাধ্য হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘ভাগ-বাটোয়ারার এই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে নিজের পোলিং এজেন্ট দেওয়া নিয়েও প্রার্থীদের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই। কেউ কেউ পোলিং এজেন্ট সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। তবে যত যাই করুক, কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবে না। ৭ জানুয়ারি জনগণ শেখ হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে বিদায় করবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন এগিয়ে যাবে, জনগণের বিজয় হবেই হবে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অবৈধ ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াতে পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘোষণার পাতানো ডামি নির্বাচন ঘিরে দেশে এক অকল্পনীয় ভয়ঙ্কর অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। বন্দুক-পিস্তল, রামদা, রড, জিআই পাইপ, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল করছে তারা। নৌকা-ডামি, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, রাষ্ট্রযন্ত্র প্রিজাইডিং অফিসার সব আওয়ামীময়-একাকার হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, ‘ছলে-বলে-কৌশলে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনার জন্য মরিয়া তারা। প্রতিটি জনপদের মানুষ আমি-ডামি প্রার্থী আর তাদের সমর্থক এবং প্রশাসনের দলবাজ কর্মকর্তাদের প্রকাশ্য হুমকি-ধমকিতে সন্ত্রস্ত। ভোট কেন্দ্রে না গেলে হত্যা, গ্রাম ছাড়া করার হুঙ্কার দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো প্রার্থী হুমকি দিচ্ছে, ভোট কেন্দ্রে না গেলে নাগরিক সুবিধা বাতিল করা হবে। ভোট না দিলে মসজিদ-কবরস্থান বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘২০১১ সালের গুলশান থানার একটি মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমসহ ৮ জন নেতাকর্মীকে সাজা দিয়েছে। আমি এই মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রত্যাহারের জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপির এ নেতা জানান, প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ২৯৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।