জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও এমআরএ’র মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

অনলাইন ডেস্ক
২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:৩৭
শেয়ার :
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও এমআরএ’র মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও এমআরএ এর মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জমান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। এমআরএ’র এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহের সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত এ অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও সংস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংক, পিকেএসএফ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তারা, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও কর্মকর্তারা, ক্ষুদ্রঋণ খাতের নেটওয়ার্কিং এজেন্সি, সাংবাদিকরা এবং জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও এমআরএ’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান ও এমআরএ এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মো. ফসিউল্লাহ্ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। 

গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে চারটি স্কিমের মাধ্যমে এ কার্যক্রম চলছে। স্কিমগুলো হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাস, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য সুরক্ষা ও স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য সমতা।

দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষকে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনার প্রত্যাশা সরকারের। দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনা এবং নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সমাজের ৮৫ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই পেনশন স্কিম চালু করা হয়। 

ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের দুই লক্ষাধিক কর্মচারীকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ সহজ করার লক্ষ্যে এমআরএ’র সঙ্গে উক্ত সমঝোতা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় চার কোটি গ্রাহককে এ বিষয়ে সচেতন করে পেনশন স্কিমে সম্পৃক্ত করতে পারবে।

প্রগতি স্কিমের মাধ্যমে যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য পেনশন হিসাব পরিচালনা করতে পারেন। এ স্কিমের অধীন এত দিন ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পরিমাণে মাসিক অর্থ (চাঁদা) জমা রাখার সুযোগ ছিল। বর্তমানে ১০ হাজার টাকা চাঁদা জমারও সুযোগ রাখা হয়েছে।

দেশের ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সনদ প্রদান করে এমআরএ। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৭২৮ টি সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ২৫ হাজার ৩৩৬টি শাখার মাধ্যমে দেশের ৪ কোটি সদস্যের মধ্যে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩০২ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। জুন ২০২৩-এ ক্ষুদ্রঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়স্থিতি ছিল ৬২ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২ লাখ ৬ হাজার ২৩৭ জন কর্মরত আছেন।

নিয়ম অনুসারে, প্রগতি স্কিমের চাঁদা কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ এবং মালিকপক্ষ ৫০ শতাংশ হারে বহন করবে। তবে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কিমে অংশ নিতে না চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং সকলকে অভিনন্দন জানান, তিনি প্রত্যাশা করেন এর মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ খাতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং এখানে গ্রাহকরা সহজেই জাতীয় পেনশন স্কিম যুক্ত হতে পারবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও অর্থ সচিব এ অনুষ্ঠানে সফলতা কামনা করে এমআরএ ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সকলকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং জাতীয় পেনশন স্কিমের সাফল্য কামনা করেন।