আমাদের নির্বাচনে অনেকের চোখ আছে: সুজন সম্পাদক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশ-বিদেশের অনেকে নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
আজ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা কার্যক্রম, ভোটবিডি ওয়েবসাইট সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সুজন সম্পাদক বলেন, ‘গত দুটি যে বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে, যেটার কারণে সরকারের যে লেজিটিমেসি (বৈধতা/ন্যায্যতা) সমস্যা তা আরও ভয়াবহ হবে। সরকার কিন্তু এই লেজিসলেটিভ সমস্যা দূরীভূত করতে পারবে না। বরং আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। কারণ, আমাদের নির্বাচনে কিন্তু আরও অনেকের চোখ আছে। অতীতে কিন্তু এই চোখ ছিল না। এই সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের আরও বিদেশি বন্ধুদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে আমাদের সার্বভৌমত্বও ক্ষুণ্ন হতে পারে। বিস্তৃত বলব না, ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যেতে পারি।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘আমি তো আসন্ন নির্বাচনকে নির্বাচনই মনে করি না। নির্বাচনের যে সংজ্ঞা তার মধ্যেই এটা পড়ে না। নির্বাচনের যে গ্রামার—বিকল্প থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ, সেটাও নেই।’
সুজনের সহযোগিতায় দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের পক্ষ থেকে ভোটবিডি ওয়েবসাইট সম্পর্কিত এ অবহিতকরণ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সদস্যরাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনে দুটো প্রধান ব্র্যান্ড। একটা আওয়ামী লীগ ও আরেকটা বিএনপি। বিএনপি তো নেই। যদি না থাকে তাহলে নিশ্চিত করে বলাই যায়, আওয়ামী লীগ চাইলে সবার সঙ্গে জিতবে। কিন্তু তারা আসন ভাগাভাগি করছে কেন? অন্যদের কিছু সিট দেওয়ার জন্য। প্রতিযোগিতা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে, নিজেদের অনুগত বা নিজেদের সৃষ্ট নাম সর্বস্ব দলগুলোর সঙ্গে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি হয়েছে। জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জাতীয় পার্টি দ্বারা মনোনীত ও আওয়ামী লীগ দ্বারা সমর্থিত। তাহলে এটাতে প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। এটা ভোটের খেলা, নির্বাচন-নির্বাচন খেলা, যা নির্বাচনী সংজ্ঞায় পড়ে না।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে উল্লেখ করে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন আসন্ন, কিন্তু তাদের নিয়োগের বৈধতার প্রশ্ন কখনো যাবে না। ভবিষ্যতে ইস্যু হয়ে থাকবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে অনেক বিতর্কিত কাজ করছেন। যেমন শাহজাহান ওমরের ব্যাপার, তিনি মামলার তথ্য গোপন করেছেন। যে মামলায় তিনি গ্রেপ্তার ও জামিন পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন। সেটিই তিনি গোপন করেছেন। যা চরম বিতর্কিত।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরী বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। এই রকম আরও অনেকে অনেকের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু আইনগতভাবে তারা কেউই বৈধ নাম প্রস্তাবকারী ছিলেন না। অথচ তাদের নাম প্রস্তাবের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। যারা বৈধ নয়, তাদের প্রস্তাবেই যদি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় তাহলে তাদের বৈধতা নিয়েও তো প্রশ্ন উঠেই। এটা নিয়ে আমি বহু সমস্যার মধ্যে আছি।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার