রাজউকের ভূমি ছাড়পত্রে জালিয়াতির দিন শেষ
ঝামেলা কমাতেই সিপির পরিবর্তে অনলাইনভিত্তিক ইসিপিএস -রাজউক ।। নতুন ব্যবস্থায় ভোগান্তি বেড়েছে -রিহ্যাব ।। রাজউক কর্মকর্তারা আন্তরিক না হলে কোনো ব্যবস্থায়ই সুফল মিলবে না - আদিল মুহাম্মদ খান
জালিয়াতি ও হয়রানি কমাতে প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়াতে চায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ জন্য ভবনের নকশা ও ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘কনস্ট্রাকশন পারমিট’ (সিপি) ব্যবস্থা বাদ দিয়ে চালু করা হয়েছে অনলাইনভিত্তিক ‘ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম’ (ইসিপিএস)। রাজউকের ভাষ্য, এ পদ্ধতিতে স্বাক্ষর জাল করে অনুমোদন নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ইসিপিএস কতটা কার্যকর হবে, সেটা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার ওপর।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে সিপি ব্যবস্থায় নকশা অনুমোদন ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র দেওয়া হতো। প্রথমবার অনলাইনের মাধ্যমে এই সেবা চালু হওয়ার পর কিছু জটিলতার মুখে পড়ে রাজউক। অনেক ফাইলে আর্কিটেকদের স্বাক্ষর জাল করার প্রমাণ পায় সরকারি এই সংস্থাটি। এ ছাড়া রাজউকের সার্ভার হ্যাক হওয়ার পর অনেক তথা গায়েব হয়ে যায়। তাই পুরনো সেবাটি বন্ধ করে নতুন করে আরও গ্রাহকবান্ধব করে ইসিপিএস ব্যবস্থা চালু করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে ৩ ও ৪ নম্বর জোনে চালু ছিল দীর্ঘ দিন। এরপর গত ১৮ নভেম্বর সব জোনেই এই সেবা চালু হয়।
রাজউকের নকশা ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র নিয়ে বেশি কাজ করে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। বেসরকারি এই সংস্থাটির মতে, রাজউকের নতুন পদ্ধতিতে ঝামেলা কমেনি বরং ভোগান্তি বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমাদের সময়কে বলেন, আগের ব্যবস্থায় একজন গ্রাহক একটা সামারির মাধ্যমে তার সমস্ত তথ্য দেখতে পেতেন। এখন রাজউকের প্রধান অফিসের কর্মকর্তারা দেখতে পেলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দেখতে পান না।
রাজউকের মুখপাত্র ও নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ইসিপিএস শতভাগ অনলাইন পদ্ধতি। তা ছাড়া সব পেশাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করা রয়েছে। যে কারণে কোনো প্রকৌশলীর কাছ থেকে ড্রইং-ডিজাইন নিলে সেটির যথার্থতা নিশ্চিত করা সহজ হয়েছে। এখানে গ্রাহক সেবা বাড়ানো হয়েছে। এখন আর কেউ অবৈধ সুবিধা নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান আমাদের সময়কে বলেন, ‘নতুন এ ব্যবস্থা ভালো, তবে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা থাকতে হবে। তারা আন্তরিক না হলে কোনো ব্যবস্থাই কার্যকর হবে না।’
ইসিপিএস নিয়ে দোহাটেক নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজউকের চুক্তি হয়েছে। তারা আগামী জুন পর্যন্ত এ সেবা দেবে। এরপর রাজউক নিজস্ব ব্যবস্থায় পরিচালনা করবে। আরবান রেজিলিয়ান্স প্রকল্পের আওতায় এটি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?