নৌকার কর্মীদের হামলায় আহত ১৮, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার পুকুরে নিক্ষেপ
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের চারটি স্থানে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নির্বাচনী প্রচার গাড়ি ভাঙচুর, পোস্টার লুট করে পুকুরে নিক্ষেপ ও প্রচারকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১৮ জন কর্মী। হামলার ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গণিপুর ইউনিয়নের আঁচিনঘাট গ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কর্মীরা তার কাঁচি প্রতীকের পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের লোকেরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন।
হামলায় রাব্বী (২৩), রোবায়েত (২৬) ও হৃদয়সহ (২১) ৬ জন আহত হন। হামলাকারীরা কাঁচি প্রতীকের তিন হাজার পোস্টার কেড়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দেয়।
এদিকে, দুপুর ২টায় বাগমারার যাত্রাগাছি এলাকায় কাঁচি প্রতীকের হ্যান্ডবিল বিতরণের সময় ফুলসার হোসেনের নেতৃত্বে কালামের লোকজন এনামুলের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আশরাফুল ইসলামের মাথা ফেটে গেছে। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আজ বিকেল ৩টায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের হাটদামনাশ এলাকায় কাঁচি প্রতীকের প্রচারণা চলাকালে নৌকা প্রতীকের একদল কর্মী প্রচার গাড়িটি ভাঙচুর করে। এ সময় নৌকা প্রতীকের কর্মী মোস্তাক, রনি ও আফাজ উদ্দিনসহ মোট ৬/৭ জন গাড়ি ও প্রচার মাইক ভাঙচুর করে।
এ সময় হামলাকারীরা গাড়িতে থাকা চার হাজার পোস্টার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গাড়ি চালক এমরান হোসেন বাদী হয়ে আজ সন্ধ্যায় নৌকা প্রার্থীর ১০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি মামলা করেছেন।
আজ সন্ধ্যায় তাহেরপুর পৌর এলাকার অর্জুনপুর মহল্লায় কাঁচি প্রতীকের সাইকেল র্যালিতে হামলায় জিল্লুর, আনোয়ার, কাসেমসহ মোট ৮ জন স্কুল ছাত্র আহত হয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী-৪ আসনে নৌকা ও কাঁচি প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সন্ত্রাসী বাহিনী আজ তার কর্মীদের ওপর চারটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে। গুরুতর আহত আশরাফুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়েছেন বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কালামের সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এসব বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা। নির্বাচনের সঙ্গে এ সব ঘটনার সম্পর্ক নেই।’
মামলায় নৌকার কর্মীদের হামলার অভিযোগ উল্লেখ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন ভোট চলছে। যে কোনো ঘটনাকে নির্বাচনী ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘পুলিশ অভিযোগগুলো তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
