‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মনজিলা-মাইনুদ্দিন-ইতি দাস’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫১
শেয়ার :
‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মনজিলা-মাইনুদ্দিন-ইতি দাস’

শরীয়তপুরের সুইসাইড নোটসহ কমল বিশ্বাস নামে নড়িয়া উন্নয়ন সমিতি (নুসা) নামের একটি এনজিও ব্যবস্থাপকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের গবিন্দমঙ্গল এলাকা থেকে সুইসাইড নোটসহ তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত কমল বিশ্বাস (৫২) ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার মৃত কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। তিনি নড়িয়া উন্নয়ন সমিতি (নুসা) নামে একটি এনজিও সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কমল বিশ্বাস দুই বছর ধরে স্থানীয় এনজিও নুসার বিঝারী শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মাঝে মধ্যে অফিসের একটি কক্ষে রাতে ঘুমাতেন। আজ সকালে একই শাখার দুজন মাঠকর্মী অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ফ্যানের সঙ্গে কমলের মরদেহ ঝুলতে দেখে বাড়ির মালিক নূর ইসলাম ঢালীকে ডাকেন। পরে নূর ইসলাম ঢালী বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

জব্দ করা ওই সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মনজিলা, মাইনুদ্দিন ও ইতি দাস। মনজিলা আমার কাছ থেকে ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা বিভিন্ন মাসে নিয়ে তা স্বীকার করে না। তার স্বাক্ষী মোক্তার হোসেনের নামে আরও ৮০ হাজার টাকা চেয়েছিল। তাকে না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা শুরু করে; যা মিথ্যা ও বানোয়াট। সে ঝগড়াটে, মিথ্যুক, প্রতারক, অত্যাচারী, আমার মৃত্যুর জন্য সেই মূল দায়ী। মাইনুদ্দিন আমার কাছ থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা নিয়ে স্বীকার করে না। সে ফাঁকিবাজ, অলস, শয়তান। সে আমার টাকাগুলো মেরে খাওয়ার জন্য মনজিলার সাথে মিলে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ইতি দাস আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে স্বীকার করেছে। আমার মোট বেতন ও গাছ বিক্রির টাকা ৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫০ টাকা পাওনা। আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে খাওয়া দাওয়ার দরকার নাই।’

এ ব্যাপারে নড়িয়া উন্নয়ন সমিতির (নুসা) মানবসম্পদ বিভাগের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কমল খুব ভাল মানুষ ছিলেন। আমি সকালে খবর পেয়ে এখানে আসি। পরে ওনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। ওনার মরদেহের পাশে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। সেখানে কয়েকজন কর্মীকে টাকা ধার দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, ‘খবর পেয়ে এক এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট জব্দ করেছি। সুইসাইড নোটে এনজিওটির টাকা-পয়সার বিষয় উল্লেখ ছিল। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীকালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’