অসাধু ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাতে সহযোগিতা করবে এফবিসিসিআই
অসাধু ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাতে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আজ সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।
সভায় আসন্ন রোজায় যেসব অসৎ ব্যবসায়ী অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট তৈরি করে পণ্যমূল্য বাড়াবে, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআই কাজ করবে বলে জানানো হয়। সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী এ বিষয়ে বলেন, ‘কাজ না হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাতে এফবিসিসিআই সহযোগিতা করবে।’
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘যারা অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট তৈরি করবে আমরা তাদের সঙ্গে নেই। ব্যবসায়ীদের কেউ অসাধু বলুক, সিন্ডিকেট করা হচ্ছে এমন কোনো কথা উঠুক, তা আমরা শুনতে চাই না। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক। কোনো সমস্যা হলে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে, কিন্তু আমাদের কোনো বদনাম হোক তা চাই না।’
মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের কথা শুনেছি। এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা আছে। এটা নিয়ে আমরা কথা বলছি। প্রয়োজনে আরও কথা বলব। মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে কথা উঠেছে, কিন্তু আমি মনে করি এটার আগে যেসব মন্ত্রণালয় বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত তাদের মধ্যে সমন্বয় হওয়াটা বেশি জরুরি।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘যারা অনৈতিকভাবে বাজারে কারসাজি করে পণ্যের সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি করবে, সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত করবে তাদের পক্ষে এফবিসিসিআই থাকবে না। এটা ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের পরিষ্কার বার্তা। আমাদের বদনাম আমাদেরই ঘোচাতে হবে। আমরা নীতি-নৈতিকতার মধ্যে থেকে ব্যবসা করব। আশাকরি সরকারও আমাদের সহায়তা করবে।’
একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১০০-১৫০ টাকা বৃদ্ধিকে কৃত্রিম সংকট উল্লেখ করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের এ নেতা বলেন, ‘এখান থেকে আমাদের (ব্যবসায়ী) বেরিয়ে আসতে হবে। কেউ যাতে বলতে না পারে সিন্ডিকেটের কথা। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট আছে নাকি?’
মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সাপ্লাই চেইনে কেউ ব্যাঘাত ঘটালে আমাদের আপত্তি আছে। কেউ কৃত্রিমভাবে সাপ্লাই চেইনে সংকট সৃষ্টি করলে তার পক্ষে এফবিসিসিআই নেই। কারণ, এটাকে আমরা সমর্থন করি না।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমিতিরও মনিটরিং করতে হবে বলে সভায় উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দেখতে হবে। কারণ এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমি চাই, আমার ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করে লাভ করুক, কিন্তু সেটা যেন অনৈতিক না হয়। আমাদের যাতে সিন্ডিকেট, অসাধু শব্দগুলো শুনতে না হয়। এদিকে আপনারা (ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা) নজর রাখবেন। আমরাই আমাদের ঠিক করব। কাউকে আমাদের ঠিক করার দরকার নেই।’
সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী ও সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির কারণসহ তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এ জন্য দ্রুত এলসি খোলার ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন পণ্যের ট্যাক্স কমানো, সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখার পরামর্শ দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডলসহ এফবিসিসিআইর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এবং টিসিবি, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধিরা।